ঢাকামঙ্গলবার , ১০ নভেম্বর ২০২০
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

এএসপি আনিসুল করিমের মৃত্যু‌কে হত্যা বল‌ছে পু‌লিশ। ১০ গ্রেফতার।

নি‌জেস্ব প্র‌তি‌বেদন।
নভেম্বর ১০, ২০২০ ২:৩৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

 

‌রাজধানীর আদাবরের ‘মাইন্ড এইড’ নামে একটি বেসরকারি মানসিক রোগ নিরাময় কেন্দ্রে বাংলাদেশ পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপারকে (এএসপি) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত আনিসুল করিম বরিশাল মহানগর পুলিশের (বিএমপি) ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়।

আদাবর থানা পুলিশ বলছে, গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে আনিসুল করিমের পরিবার তাঁকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে ভর্তি করে। ভর্তির কিছু সময় পরই তাঁকে অচেতন অবস্থায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনিসুলকে মৃত ঘোষণা করেন। ভর্তির পরপর মাইন্ড এইড হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে বলে পরিবারের অভিযোগ।

এ ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনার পর তার মৃত্যুকে ‘হত্যা’ বলছে পুলিশ।

এবিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, ‘এএসপি আনিসকে মারধরের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়েছে। ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। এই ঘটনার সঙ্গে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ, ব্যবস্থাপনার জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

এর আগে মানসিক সমস্যায় ভুগে রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এএসপি আনিসুল করিম শিপনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আনিসুল করিম শিপনের বাবা বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে আদাবর থানায় আজ মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) মামলাটি দায়ের করেছেন। আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহিদু্জ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ইতিপূর্বে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হাসপাতালের ব্যবস্থাপকসহ ছয়জনকে আটক করেছে।

এই ঘটনায় মাইন্ড এইড হাসপাতাল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জব্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ব্যবস্থাপকসহ আটজনকে আটক করা হয়েছে বলে সোমবার দিবাগত রাতে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহিদুজ্জামান।

ওসি আরো বলেন, ‘নিহতের পরিবার বলছে, তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় পরিবার মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকও করা হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ভর্তির সময় থেকেই উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছিলেন আনিসুল করিম। তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন চিকিৎসক। সে সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে যায়।’

কাজী সাহিদুজ্জামান আরো বলেন, ‘এই ঘটনার একটি ফুটেজ আমরা জব্দ করেছি। সেখানে কয়েকজনকে মারধর করতে দেখা গেছে। বিষয়টা আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

জানা গেছে, আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএসের পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ওই বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারের মেধা তালিকায় দ্বিতীয় ছিলেন। প্রথমজন ফাউন্ডেশন কোর্স না করায় তাঁকেই ব্যাচের প্রথম হিসেবে ধরা হতো। তবে পুলিশের এই কর্মকর্তা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এজন্য তাঁকে মানসিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

পুলিশের উদ্ধার করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এ ঘটনায় ওই হাসপাতাল থেকে জব্দ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা যায়, বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। তাঁকে হাসপাতালের ছয়জন কর্মচারী মিলে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এরপর নীল পোশাক পরা আরও দুজন কর্মচারী তাঁর পা চেপে ধরেন। এ সময় মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারী হাতের কনুই দিয়ে তাঁকে আঘাত করছিলেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পেছনে বাঁধা হয়।

চার মিনিট পর আনিসুলকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই তাঁর শরীর নিস্তেজ ছিল। একজন কর্মচারী তখন তাঁর মুখে পানি ছিটান। তাতেও আনিসুল করিম নড়াচড়া করছিলেন না। তখন কর্মচারীরা কক্ষের মেঝে পরিষ্কার করেন। সাত মিনিট পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। ১১ মিনিটের মাথায় কক্ষের দরজা লাগিয়ে দেওয়া হয়। ১৩ মিনিটের মাথায় তাঁর বুকে পাম্প করেন সাদা অ্যাপ্রোন পরা নারী।

নিহত আনিসুল করিম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগ থেকে স্নাতোকত্তর সম্পন্ন করেছিলেন। বরিশাল মহানগর পুলিশের আগে তিনি নেত্রকোনা জেলা, ঢাকা মহানগর পুলিশ, র‌্যাব ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে দায়িত্ব পালন করেন।

এদিকে এএসপি আনিসুল করিম নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন শোক প্রকাশ করে বলেছে, আনিসুল করিমের মতো একজন মেধাবী কর্মকর্তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ভীষণ শোকাহত ও মর্মাহত।

অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।