ঢাকাসোমবার , ১ জানুয়ারি ২০২৪
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

এবারের নির্বাচন যেভাবে হচ্ছে সেটিকে ভোট নয়, আওয়ামী লীগের দলীয় কাউন্সিল: জেড আই খান পান্না

অনলাইন ডেস্ক
জানুয়ারি ১, ২০২৪ ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

এবারের নির্বাচন যেভাবে হচ্ছে সেটিকে ভোট নয়, আওয়ামী লীগের দলীয় কাউন্সিল বলে মন্তব্য করেছেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান জেড আই খান পান্না।
তিনি বলেন, একদল নৌকার প্রতীক পেয়েছে, আরেকদল পায়নি। যারা প্রতীক পেয়েছে আর যারা পায়নি- তাদের মধ্যে হচ্ছে ইলেকশন।
উভয় গ্রুপই কিন্তু নেত্রীর প্রতি, দলের প্রতি অবিচল, আস্থাশীল। এখানে তো অপজিশন বলে কিছু থাকবে না। বেসিক্যালি আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হলে যেটা হত, সেটা এখন এই ভোটের মাধ্যমে হচ্ছে। এক দলেরই ভোট।
যেভাবে দলীয় কাউন্সিল হয়, এবারের নির্বাচনও সেভাবেই হচ্ছে। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৩: আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনে দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়, যা বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে সংকলিত। তবে প্রশ্নোত্তর পর্বে নির্বাচন নিয়ে নানা প্রশ্ন আসে সাংবাদিকদের তরফ থেকে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল। তিনি বলেন, সবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকারের কথা বলা থাকলেও দলীয় প্রার্থীরা পাচ্ছে বিশেষ সুবিধা।
সংশোধিত নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ২০০৮ অনুযায়ী, নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার মোট ভোটারের এক শতাংশের নাম-স্বাক্ষর এবং ভোটারের মোবাইল ফোন নম্বরের তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হয়।
অন্যদিকে নির্দিষ্ট দল মনোনীত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এই বাধ্যবাধকতা নেই। নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতি এই বৈষম্যমূলক আচরণ মূলত তাদেরকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিরুৎসাহিত করার একটি পন্থা, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং সংবিধান ও গণতন্ত্রের পরিপন্থি।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা দেশে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৫৩৪টি মামলা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব মামলায় দলটির প্রায় ২০ হাজারের মতো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ সংখ্যাকে ১১ হাজার বলে দাবি করেছেন।
নিম্ন আদালতে সাজা দেওয়ার ঘটনা লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে। ঢাকায় গত ৫ মাসে ৯২ মামলায় সাজা হয়েছে অন্তত ১ হাজার ৫১২ জন সরকার বিরোধী নেতা-কর্মীর।

বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিজেদের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও সংঘাত থামছে না উল্লেখ করে ফারুখ ফয়সল বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারকে কেন্দ্র করেও চলছে সংঘাত।প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনি প্রচারশিবির ও মিছিলে হামলা, কর্মীদের মারধর ও হুমকি দেওয়া চলছেই।
মাদারীপুরে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, যাকে ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজের কর্মী বলে দাবি করেছেন। মুন্সীগঞ্জে এক কর্মীর বাড়িতে গুলির ঘটনা ঘটেছে।
নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো ছাড়াই এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং নিজ দলীয় প্রার্থীদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও নিজেদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ লক্ষণীয়।
২০২৩ সালে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংঘাতে কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং অন্তত ছয় হাজার ৯৭৮ জন আহত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবশেকে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয়েছে।
পেশাগত দায়িত্ব পালনে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকেরা। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে একজন পুলশি সদস্যকে, যা কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে কাম্য নয়।
জনগণকে জিম্মি করে বাস-ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা এবং রেল লাইন কেটে নাশকতা সৃষ্টি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হতে পারে না।
মানুষকে পুড়িয়ে, জান-মালের ক্ষতি করার যে প্রবণতা তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ২০২২ সালের সংবাদ সম্মেলনে আসকের তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক নূর খান বলেছিলেন, দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিভীষিকাময়।
এখনও কি সেই পরিস্থিতি আছে, জানতে চাইলে সংস্থাটির চেয়ারপারসন জেড আই খান বলেন, নূর খানের কাছে বিভীষিকাময় মনে হয়েছিল, আমার কাছে কখনোই বিভিষীকাময় মনে হয়নি।

তাহলে কি দেশের পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক?- এ প্রশ্নে সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, না সেটাও না। দেখেন আমি কিন্তু আমার কোনো স্টাফকে এখানে কথা বলতে দিচ্ছি না।
কারণ, সে জেলে যাক, এটা আমি চাই না। নিলে পরে আমাকে নিক। আর কী বলব বলেন? জেলে গেলে তো একটা নিরাপদ, কিন্তু জেলে না নিয়ে যদি পিটায়, তাহলে তো আরও ভয়াবহ অবস্থা।

ডিবি অফিসে মধ্যাহ্ন ভোজের যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডিবি অফিসে গিয়ে এ রকম লাঞ্চ খায়, এটা আমি আগে জীবনে শুনিনি।
ডেঙ্গুর বিষয়টিও এবার স্থান পেয়েছে আসকের প্রতিবেদনে। বলা হয়, চলতি বছর ডেঙ্গুর সংক্রমণ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। এ বছরে আক্রান্তের হার যেমন বেড়েছে, তেমনি মৃত্যুর সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে।
এ বছরের ২৭ ডিসেম্বর র্পযন্ত মোট ১ হাজার ৬৯৭ জন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। যেখানে গত ২৩ বছরে দেশে ডেঙ্গুতে মোট মারা গেছেন ৮৬৮ জন।”

মজুরি বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিক আন্দোলনে অন্তত ৩০০টি পোশাক কারখানা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে ফারুখ ফয়সল বলেন, চলমান আন্দোলনে আইশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে আঞ্জুয়ারা বেগম, রাসেল হাওলাদার ও জালালউদ্দিনসহ মোট তিনজন শ্রমিক নিহত হন।
মজুরি বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন করার ন্যায্য অধিকার রয়েছে, কিন্তু সেই আন্দোলনে গুলিবর্ষণ করে শ্রমিক মেরে ফেলা সম্পূর্ণভাবেই শ্রমিক অধিকারের লঙ্ঘন।

তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ সভা সমাবেশে বাধা দেওয়া, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গায়েবি মামলা, রাজনৈতিক গ্রেপ্তার, বিচার বহির্ভূত হত্যা, হেফাজতে নির্যাতন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আইনবহির্ভূত আচরণ, ধরে নিয়ে যাওয়ার পর গুম করার অভিযোগ, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে।

ফারুখ ফয়সল বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো সরকার ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ এসব অভিযোগকে দেশি-বিদেশি প্রচারণার অংশ হিসেবে উল্লেখ করে নানা ধরনের দুঃখজনক মন্তব্য করেছেন।

বছরজুড়ে ২৯০ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।
যাদের মধ্যে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হামলার শিকার হয়েছেন অন্তত ৭৮ জন সংবাদকর্মী। সংবাদ প্রকাশের জের ধরে বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর প্রতিনিধি ও ৭১ টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।”

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২৩ সালে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে ৩০ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
গত বছর সীমান্ত মৃত্যুর এ সংখ্যা ছিল ২৩। জানানো হয়, এ বছর দেশের বিভিন্ন কারাগারে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা গেছেন ১০৫ জন। গত বছর কারা হেফাজতে মৃত্যু হয় ৬৫ জনের।

সারাদেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ৫৭৩ জন নারী। এর মধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৩৩ জন, ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন।

এ বছর পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ৫০৭ জন নারী, যার মধ্যে নির্যাতনের কারণে মারা যায় ২৯২ জন, আত্মহত্যা করেন ১৪২ জন।
৩২ জন নারী গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের কারণে মারা যায় ৬ জন, এছাড়া রহস্যজনক মৃত্যু হয় একজনের।

এ বছরে নির্যাতন, ধর্ষণের পরে হত্যা, ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যা, অপহরণ ও নিখোঁজের পর হত্যাসহ বিভিন্ন কারণে কমপক্ষে ৪৮৪ জন শিশু নিহত হয় উল্লেখ করে আসক জানিয়েছে, ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩১৪ জন শিশু।
ধর্ষণ চেষ্টা ও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ১১৮ জন শিশু; আর বলাৎকারের শিকার হয়েছে ৭৫ ছেলে শিশু।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।