গাজায় ইসরাইলকে যুদ্ধ বন্ধ করতে বলেছে ইরান। যদি তা করা না হয়, তাহলে ওই অঞ্চল তথা মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান এ সতর্কতা দিয়েছেন। এ সময় তিনি ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেও দায়ী করেন। এর কয়েক ঘন্টা পর নিজের সেনাদের সতর্ক করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সেনাদের তিনি বলেছেন, জনগণের জীবনের জন্য যুদ্ধ করছে তারা। হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হলো ‘ডু অর ডাই’। অর্থাৎ হয় বাঁচবো না হয় মরবো। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
অভিযোগ আছে, গাজায় হামাস এবং লেবাননে হিজবুল্লাহকে সমর্থন দিচ্ছে ইরান। ৭ই অক্টোবর হামাসের রকেট হামলার পর ইসরাইলে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১৪০০ মানুষ।
এর প্রতিশোধ নিতে ইসরাইল ক্রমাগতভাবে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে গাজার নিরীহ মানুষের ওপর। এতে ৪৭৪১ জন সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে তারা।
জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু কারো কথায় কান দিচ্ছে না ইসরাইল। উল্টো যুদ্ধ ও হত্যার উন্মাদনা পেয়ে বসেছে নেতানিয়াহুকে। তাই শনিবার তিনি আকাশপথে বোমা হামলা জোরালো করার ঘোষণা দিয়েছেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাজধানী তেহরানে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহিয়ান। এতে তিনি বলেছেন, আমি যুক্তরাষ্ট্র ও তার প্রক্সি ইসরাইলকে এই বলে সতর্ক করছি যে, যদি গাজায় মানবতার বিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ না হয়, তাহলে যেকোনো সময় যেকোনো ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এতে এই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। যদি তা-ই হয়, তাহলে এর ফল হবে ভয়াবহ ও তিক্ত। আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিকভাবে এই যুদ্ধের যারা পরামর্শ দিচ্ছে তাদের সবার জন্যই এর প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী।
তিনি আরও বলেন, এই যুদ্ধে ইসরাইলকে সামরিক সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এটাই প্রমাণ হয় যে, গাজায় চলমান যুদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইসরাইলের প্রক্সি যুদ্ধ।
ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারাও এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার সতর্কতা দিয়েছেন। মার্কিন নাগরিক ও সেনাদের ওপর হামলার বড় রকম ঝুঁকি আছে বলে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। এবিসি নেটওয়ার্কের দিস উইক প্রোগ্রামে তিনি বলেন, যদি কোনো গ্রুপ বা দেশ এই যুদ্ধকে ছড়িয়ে দিতে চায়, সুবিধা নিতে চায় দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির- তাদের জন্য আমাদের পরামর্শ হলো এটা করবেন না।
ওদিকে ইরানের পক্ষ থেকে প্রক্সি দেয়ার মাধ্যমে এই যুদ্ধে উস্কানি দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।