সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির অভিযোগ ঘিরে নতুন প্রশ্ন— সরকারগুলো কি দায় এড়াতে তত্ত্ব দাঁড় করায়, নাকি সত্যিই আন্দোলনে ঢুকে পড়ে ষড়যন্ত্রকারীরা?
বিশ্লেষণ
নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ১০ দিন আড়ালে থাকার পর প্রকাশ্যে এসে বিস্ফোরক দাবি তুলেছেন। তার অভিযোগ, সাম্প্রতিক আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের প্রাণহানি ঘটিয়েছে পুলিশ নয়, বরং ‘অনুপ্রবেশকারীরা’। ওলির দাবি, পুলিশের হাতে এ ধরনের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নেই, তাই হত্যার দায় বাহ্যিক শক্তি বা ষড়যন্ত্রকারীদের ওপর বর্তায়।
এই বক্তব্য অনেকের কাছে নতুন হলেও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে এটি একেবারেই অচেনা নয়। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে জুলাই আন্দোলনের সময়ও একই ধরনের অভিযোগ তুলেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছিলেন, সব মৃত্যু পুলিশের গুলিতে হয়নি, বরং আন্দোলনের ভেতর থেকেই পরিকল্পিত হত্যা চালানো হয়েছিল—যেন সরকারের ওপর দায় চাপানো যায়।
প্রশ্ন উঠছে, সরকারগুলো কি নিজেদের দায় এড়াতে “অনুপ্রবেশকারীর” তত্ত্ব সামনে আনে, নাকি সত্যিই আন্দোলনের ভেতরে ষড়যন্ত্রমূলক অনুপ্রবেশ ঘটে? ইতিহাস বলছে, গণআন্দোলনে মৃত্যু ও রক্তপাতের দায় সহজে মুছে যায় না। জনগণ সবসময় প্রথম জবাবদিহি সরকারের কাছেই খোঁজে।
ঢাকা হোক বা কাঠমান্ডু—ক্ষমতার খেলায় গল্পগুলো প্রায় একই ছন্দে বাজে। যেমন বাংলাদেশে ড. ইউনুস দাবি করেছিলেন, ছাত্ররা হঠাৎ করেই তাকে ক্ষমতা নিতে বলেছিল। অথচ ছাত্রনেতারা বলছে, সরকার পতনের আগেই তার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়েছিল। নেপালের ক্ষেত্রেও আন্দোলনের আড়ালে কে বা কারা ছিলেন, সে প্রশ্নের উত্তর শিগগিরই সামনে আসবে।
তবে বড় প্রশ্ন থেকে যায়—বাংলাদেশের মতো নেপালেও কি এই ‘অনুপ্রবেশকারীরা’ শেষ পর্যন্ত অচিহ্নিতই থেকে যাবে, জনতার কাছে?