ঢাকারবিবার , ৬ আগস্ট ২০২৩
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘পাপিয়া-কাণ্ডের’ পর বেরিয়ে আসছে কাশিমপুর মহিলা কারাগারের অনিয়মের খবর

অনলাইন ডেস্ক
আগস্ট ৬, ২০২৩ ৮:৫৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে ‘পাপিয়া-কাণ্ডের’ পর বেরিয়ে আসছে নানা অনিয়মের খবর।
ওই ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার তদন্ত চলাকালেই কারাগারের জেল সুপারকে বদলি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে বদলি করা হয় সেখানকার ছয় নারী কারারক্ষীকে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ৩ আগস্ট এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে,
‘কারা অভ্যন্তরে কারা কর্তৃপক্ষের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদ ছাড়া অমানবিক নির্যাতন ও নীতিবিবর্জিত কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়।’
কমিশন এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে ১৪ আগস্টের মধ্য প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মানবাধিকার কমিশনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শককে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ৫০–এর বেশি কারারক্ষী, বন্দী, জেলার ও জেল সুপারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এ ঘটনায় কারা অধিদপ্তরের পৃথক আরেকটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে।

ঢাকার পাঁচ তারকা হোটেলে বিলাসবহুল কক্ষ ভাড়া নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের বিষয়ে আঁচ পেয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় ২০২০
সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া ও তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।
এরপর পাপিয়াকে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
ওই বছরই অস্ত্র মামলায় পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়। এখনো তাঁদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা বিচারাধীন।

কারা অধিদপ্তর ও কাশিমপুর মহিলা কারাগার সূত্র জানায়, বহুদিন ধরে কারাগারে নানা অনিয়ম চলে আসছে।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই পাপিয়া কারাগারের ভেতরে অপরাধী চক্র গড়ে তোলেন।
২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পাপিয়া ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণসহ সহযোগী কয়েদিদের সঙ্গে নিয়ে সাধারণ নারী বন্দীদের নির্যাতন করেছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় জুন মাসে শিক্ষানবিশ আইনজীবী রুনা লায়লাকে নির্যাতন করা হয়।

কারাগার সূত্র বলছে, কারাগারে অপরাধী চক্র গড়তে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদ দিয়েছেন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারাই।
প্রভাবশালী বন্দীদের কাছ থেকে সুবিধা পাওয়ার কারণেই কর্মকর্তারা কোনো প্রতিবাদ করেননি, শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেননি।
‘পাপিয়া-কাণ্ডের’ পরই এসব অনিয়ম ও অপকর্মের খবর বেরিয়ে এসেছে।

পাপিয়া–কাণ্ড ৩০ জুলাই একযোগে ছয় কারারক্ষীকে ছয় জেলায় বদলি করা হয়।
এ ঘটনায় তাঁরা বলছেন, পাপিয়া–কাণ্ডে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা দায়ী থাকলেও তাঁদের বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে।
তাঁরা ঘটনাস্থলেই ছিলেন না।
কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের রেকর্ড বইয়ে পাপিয়ার বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, পাপিয়া হাজতি রুনা লায়লা ছাড়াও বেশ কয়েকজন বন্দীকে গালাগালি ও শারীরিকভাবে আঘাত করেছেন।
এ ছাড়া তিনি কারাগারের রজনীগন্ধা ভবনে অন্য বন্দী দিতে চাইলে আপত্তি জানান।
পাপিয়া গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা
করার জন্য কারারক্ষীদের ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ইচ্ছেমতো অন্য বন্দীদের সেল পরিবর্তন করতেন।
তাঁর কক্ষ তল্লাশি করে স্মার্টফোন ও চার্জার পাওয়া যায়। আর সবই সম্ভব হয়েছে জেল কর্তৃপক্ষের মদদে।

প্রসঙ্গত, ঢাকার কোতোয়ালি থানার একটি মামলায় শিক্ষানবিশ আইনজীবী রুনা লায়লাকে ১৬ জুন
কাশিমপুর মহিলা কারাগারে নেওয়ার পর তাঁর দেহ তল্লাশি করে কর্তব্যরত মেট্রন ৭ হাজার ৪০০ টাকা পান।
ওই টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য পাপিয়া ও তাঁর সহযোগীরা গত ১৯ জুন রুনাকে নির্যাতন করেন।

অভিযোগ রয়েছে, একপর্যায়ে প্রচণ্ড মারধর করে রুনাকে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়।
এ নিয়ে কারাগারের ভেতরে সালিস বসে। সেখানে ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বন্দী ও কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ঘটনার পর জুলাইয়ের শুরুতে পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

পাপিয়া–কাণ্ড ৩০ জুলাই একযোগে ছয় কারারক্ষীকে ছয় জেলায় বদলি করা হয়।
এ ঘটনায় তাঁরা বলছেন, পাপিয়া–কাণ্ডে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা দায়ী থাকলেও তাঁদের বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে।
তাঁরা ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। এরই মধ্যে তাঁরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বাসায় গিয়ে দেখা করেছেন।
তাঁরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বদলি স্থগিত করে কারাগারের অনিয়ম বিষয়ে তদন্তের দাবি জানান।

এক কারারক্ষী বলেন, ‘তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় আমরা কোনো দোষ করেছি, তবে আমাদের চাকরি
থেকে বাদ দেওয়া হোক, তবু আমরা তদন্ত চাই।
কারাগারে সব দোষ করেন বড় কর্মকর্তারা আর
শাস্তি দেওয়া হয় আমাদের মতো চুনোপুঁটিদের।’ তাঁদের অভিযোগ, ঘটনার সময় তাঁরা সেখানে ছিলেন না।

সদ্য বদলি হওয়া জ্যেষ্ঠ জেল সুপার ওবায়দুর রহমান ও জেলার ফারহানা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, এই ছয়জনের কেউই পাপিয়া-কাণ্ডে জড়িত ছিলেন না। তাঁদের বদলির বিষয়টি সম্পূর্ণ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এখতিয়ার।

জ্যেষ্ঠ জেল সুপার ওবায়দুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাঁকে পাপিয়া–কাণ্ডে বদলি করা হয়েছে কি না।
তিনি বলেন, ‘আমি এই কারাগারে এসেছি মাত্র পাঁচ মাস, এখানে যখনই কোনো অনিয়ম হয়েছে ব্যবস্থা নিয়েছি।
পাপিয়া-কাণ্ডের তদন্তের আগে আগেই আমাকে বদলির কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না।’

জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, তদন্ত চলছে। তদন্তে যাঁরাই দোষী সাব্যস্ত
হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাশিমপুর কারাগারের মহিলা কারারক্ষীরা দেখা করেছিলেন কি না, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,
‘তাঁরা এসেছিলেন আমার কাছে। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, পাপিয়া–কাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে তাঁদের
সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও তাঁদের বদলি করা হয়েছে। আমি সচিবকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিবেচনা করার কথা বলেছি।’ তথ্যঃ প্রথম আলো।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।