বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের একটি হলো আরবাইন। প্রতিবছর এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন লাখ লাখ শিয়া মুসলিম। এটি মূলত একটি শোক অনুষ্ঠান। মহানবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) শাহাদতের ৪০তম দিনকে বলা হয় আরবাইন।
এই দিনটি উপলক্ষে লাখ লাখ শিয়া মুসলিম ইরাকের কারবালায় জড়ো হন ইমাম হোসাইনের (রা.) কবর জিয়ারতের উদ্দেশে। এ সমাবেশ বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ ও বৃহত্তম পদযাত্রা।
এ বছর ২১ মিলিয়ন তথা ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ শনিবার কারবালায় জড়ো হন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আলজাজিরা।
৬১ হিজরির ১০ই মুহররম কারবালার যুদ্ধে ইমাম হোসাইনের মৃত্যুর স্মরণে আশুরার ৪০ দিন পর আরবাইন পালন করা হয়। ইমাম হোসাইনের মৃত্যুর এই দিনটি শিয়া ইসলামের অন্যতম ভিত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়।
২০১৯ সালে আরবাইনে ইরান, লেবানন, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ থেকে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি শিয়া মুসলমান একত্রিত হন বলে ধারণা করা হয়। ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চলসহ সারা বিশ্বের নানা অঞ্চল থেকে শোকার্ত মুসলমানরা আরবাইনে পবিত্র কারবালায় ইমাম হোসাইন (রা.) ও তার সঙ্গীদের মাজার জিয়ারত করেন।
অনেকেই শত শত কিলোমিটার দূর থেকে পায়ে হেঁটে কারবালায় আসেন নবী-পরিবারের বন্দিদের শত শত কিলোমিটার বাধ্যতামূলক পদযাত্রার স্মরণে। তবে আরবাইনের এ যাত্রা বেশ কঠিন। দিনের বেলায় ৩৬ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার গরমে আরবাইনের যাত্রা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। গরম, মানুষের ভিড়, ক্লান্তি, পানিশূন্যতায় প্রায়ই মানুষের অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার খবর আসতে থাকে।
আরবাইনে যোগ দেয়া মানুষদের জন্য স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি বহু বিদেশিও খাবার, পানি এবং বিছানার মতো প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করার জন্য রাস্তার পাশে বিশ্রামের স্থান, অস্থায়ী স্টল এবং ক্লিনিক স্থাপন করেন।
২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরুর পর এবারই প্রথম কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা ছাড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে আরবাইন। গতবছর এতে অংশ নেওয়ার জন্য বিদেশিদের সংখ্যা ৪০ হাজারে সীমাবদ্ধ করেছিল ইরাক। ইরান থেকে ৩০ হাজার জনকে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেয়া হয়।