ঢাকাশনিবার , ২০ মার্চ ২০২১
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজধানীর প্রায় ৯৮% হাসপাতালই আগু‌নের ঝুঁ‌কি‌তে!

নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ২০, ২০২১ ২:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

হিসা‌বের চিত্র‌টি চক্ষু চড়ক হওয়ার ম‌তো হ‌লেও এটাই বাস্তবতা। সারা রাজধানী‌তে প্র‌তি ১০০ টি হাসপাতা‌লের ম‌ধ্যে অ‌গ্নিকান্ড থে‌কে নিরাপদ ২টিরও কম হাসপাতাল।

‌গেল বছ‌রের মার্চ থে‌কে করোনাকালে আইসিইউতে চাপ পড়ায় বাংলাদেশের হাসপাতাল গুলোতে আগুনের ঝুঁকি বেড়েছে৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের সব হাসপাতাল ও ক্লিনিককে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা করতে বললেও সেখানে আগুন লাগার ঝুঁকি কমার লক্ষণ নেই৷

সর্বশেষ গত ১৭ মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাতালের করোনা ইউনিটের আইসিইউতে আগুন লেগে চার জন রোগী মারা গেছেন৷ এর আগে গত বছর মে মাসে বেসরকারি ইউনাইটেড হাসাপাতালে করোনা ইউনিটে আগুন লেগে পাঁচ জন মারা যান৷

এর বাইরে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন স্থানের হাসপাতালগুলোতে আগুন লাগার ঘটনাও অনেক ঘটেছে৷ ঢাকা মেডিকেলে গত জানুয়ারি মাসেই আরেকবার আগুন লেগেছিল৷ ওই আগুন লেগেছিল পুরনো ভবনের আইসিইউতে৷

ফায়ার সার্ভিসের হিসেব অনুযায়ী গত বছর (২০২০) সারাদেশে মোট আগুনের ঘটনা ঘটেছে ২১ হাজার ৭৩টি৷ এর মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে আগুনের ঘটনা ঘটেছে ৯০ টি৷ তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৯ সালে সারাদেশে আগুনের ঘটনা ছিল ২৪ হাজার৷ তারমধ্যে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে আগুনের ঘটনা ছিল ৭৭৮টি৷ কিন্তু করোনার সময় আইসিইউতে আগুন লাগার ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে৷

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. ফরিদ হোসেন জানান, ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে সর্বশেষ আগুনের ঘটনা সামান্য একটা স্পার্ক থেকে৷ আর তা থেকে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে৷ তিনি বলেন, ‘‘আরো অনেকের প্রাণহানি হতে পারতো৷ কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমত দ্রুত রোগীদের সরিয়ে নেয়ায় প্রাণহানি কম হয়েছে৷’’

তিনি জানান, ‘‘করোনার সময়ে হাসপাতালের আইসিইউগুলোতে আগুনের ঝুঁকি বেড়ে গেছে৷ এর প্রধান কারণ লোড বেড়ে যাওয়া৷ আইসিইউতে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা থাকায় সেখানে অক্সিজেনোর চাপ অনেক বেশি৷ তাই সামান্য একটি স্পার্ক হলেও আগুন ধরে যায়৷ ঢাকা মেডিকেলে তাই হয়েছে৷’’

তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে এখন রোগীডের লোড নেয়ার মতো ক্যাপাসিটি নাই৷ ইলেকট্রিক লাইনগুলোও লোড নিতে পারছে না৷ শর্ট সার্কিটের আশঙ্কা আছে৷ তবে হাসপাতালগুলোর এই অবস্থা নতুন নয়৷ ফায়ার সার্ভিসের হিসাব অনুযায়ী, ঢাকার ৪৪২টি হাসপাতালের মধ্যে ৪২২টি হাসপাতালই আগুন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে৷ শতকরা হিসেবে এটা ৯৭.৫ ভাগ৷ এই হাসপাতালগুলোকে ফায়ার সার্ভিস নোটিশ দিলেও তেমন কাজ হয় না৷ এই তালিকায় ‘সাধারণ ঝুঁকিতে’ আছে ২৪৯টি এবং ‘খুবই ঝঁকিপূর্ণর’ তালিকায় রয়েছে ১৭৩টি৷ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ‘খুবই ঝঁকিপূর্ণ’ তালিকার একটি সরকারি হাসপাতাল৷ ঢাকা শহরের আরো ২০টির মতো বড় সরকারি হাসপাতাল আছে এই তালিকায়৷ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘খুবই ঝঁকিপূর্ণ’ সোরাওয়ার্দী হাসপাতালেও আগুন লেগেছিল৷

ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের সহকারী পরিচালক ছালেহ উদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা প্রতিবছরই তাদের নতুন করে নোটিশ দিই৷ আমাদের পরিদর্শন টিমও যায়৷ কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয় না৷ আমরা সরাসরি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না৷ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের জানাই৷’’

তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালগুলোর ফায়ার সেফটি খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে৷ সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালেরই একই অবস্থা৷ অনেক হাসাপতালে ফায়ার সেফটি বলতেই কিছু নেই৷ কিন্তু প্রত্যেক হাসপাতালে ফায়ার সেফটি থাকা বাধ্যতামূলক৷’’ তবে ফায়ার সার্ভিস মনে করে, করোনার সময় হাসপাতালে আগুন লাগা বেড়ে গেছে সেরকম কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই৷ তাদের মতে, ভবনের ফায়ার সেফটি নেশনাল বিল্ডিং কোড-এর সঙ্গে জড়িত৷ তবে যে ভবনে দাহ্য পদার্থ বেশি থাকবে সেই ভবনের অগ্নি নিরাপত্তাও তত ভালো হতে হবে৷ ভবনটি কী কাজে ব্যবহার করা হচেছ তা খুবই জরুরি ফায়ার সেফটি নির্ধারণে৷

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল জিল্লুর রহমান বলেন, ‘‘হাসপাতালে অনেক বেশি ইলেকট্রিক এবং ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম থাকে৷ হাসপাতালে এখন অত্যাধুনিক এমআরআই মেশিন, এক্স-রে মেশিন আছে৷ কিন্তু হাসপাতাল ভবনগুলো অনেক পুরনো৷ আবার আইসিইউতে হাই অক্সিজেন ফ্লো থাকে৷ তাই পুরনো অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়৷’’

তিনি বলেন, তারা হাসপাতালগুলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এবিষয়ে সতর্ক করেন, কিন্তু সরসারি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না৷

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক দাবি করেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও ইউনাইটেড হাসপাতালে আগুনের পর সতর্ক করা হয়েছে৷ সব হাসপাতালের আইসিইউ পুরোপুরি ফায়ার প্রুফ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ এটা আমরা মনিটরিং করবো৷’’

তিনি আরো জানান, আগুনের পর ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউ আরো সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করা হয়েছে৷

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।