চট্টগ্রামের রাউজানে কলেজছাত্র অপহরণ-খুন এবং লাশ গুমের ঘটনায় আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
এ নিয়ে র্যাব ও পুলিশের হাতে এই ঘটনায় জড়িত ৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।
নতুন করে গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হচ্ছেন রাঙ্গামাটির উচিংথোয়াই মারমা (২৩) ও বান্দরবানের ক্যাসাই অং চৌধুরী (৩৬)।
গতকাল শনিবার রাতে র্যাবের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর পতেঙ্গা ও শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-৭ চট্টগ্রামের প্রধান লেফট্যানেন্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম আজ রবিবার সকালে সংবাদ মাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
র্যাব চট্টগ্রামের প্রধান গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে জানান, শিবলী সাদিক হৃদয় (২০) পড়ালেখার পাশাপাশি গ্রামের সিকদার পাড়ায় একটি মুরগির খামারে চাকরি করতেন।
এ হত্যায় জড়িত পাঁচ যুবক ও হৃদয় একই মুরগির ফার্মে কাজ করতেন।
কর্মস্থলে বিরোধের জেরে পাঁচ সহকর্মীর পরিকল্পনায় অপহরণ করে পাহাড়ের একটি অপরাধী চক্রকে দিয়ে হৃদয়কে খুন করায়।
এরপর লাশ গুমের উদ্দেশে শরীর থেকে মাংস ও হাড়গোড় আলাদা করে পাহাড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখে।
গত ২৮ আগস্ট রাতে রাউজানের কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়া থেকে হৃদয়কে অপহরণ করা হয়েছিল।
হৃদয়কে অপহরণ ও খুনের ঘটনায় জড়িত পাঁচ জনকে গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতে পুলিশ নগরীর চান্দগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
তারা হলেন রাঙ্গামাটি জেলার উমং চিং মারমা (২৬), সুইংচিং মং মারমা (২৪), অংথইমং মারমা (২৫), আছুমং মারমা (২৬) এবং উক্য থোয়াইং মারমা (১৯)।
এই পাঁচজন গ্রেপ্তারের পর গত ১১ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার বালুখালী পাহাড় থেকে মাটি খনন করে হৃদয়ের কঙ্কাল উদ্ধার করে রাউজান থানা পুলিশ।
পুলিশ গ্রেপ্তার হওয়া পাঁজনকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে হৃদয়ের কঙ্কাল উদ্ধার করে গ্রামে ফেরার পর উত্তেজিত জনতা উমং চিং মারমা (২৬)-কে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলে।
গ্রেপ্তার ৭ জনের মধ্যে সুইচিং মং মারমা ও অংথুইমং মারমা আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
র্যাব চট্টগ্রাম জোনের সদর ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২৮ আগস্ট হৃদয়কে অপহরণ করা হয়।
তার মোবাইল থেকে তার বাবার কাছে ফোন করে উচিংথোয়াই ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
বাবা টাকা দিতে রাজি হন এবং কিছু সময় চান।
এরপরও ২৯ আগস্ট হৃদয়কে খুন করা হয়।
খুনের পর আবারও উচিংথোয়াই তার বাবাকে ফোন করে টাকার জন্য চাপ দেন।
১ সেপ্টেম্বর বাবা ও নানা মিলে বান্দরবানে গিয়ে তার হাতে দুই লাখ টাকা দেন।
তখন উচিংথোয়াই জানান যে, হৃদয়কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
