ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান পাঁচ মাসে গড়িয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কখনো তীব্র হামলা, কখনো আবার হামলার মাত্রা কমিয়েছে রুশ বাহিনী। তবে শনিবার (২৫ জুন) ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, শনিবার পশ্চিম ও উত্তর ইউক্রেনের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় বৃষ্টির মতো কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া।
লভিভের গভর্নর ম্যাকসিম কোজিটস্কি অনলাইনে পোস্ট করা এক ভিডিওতে বলেন, পশ্চিম ইউক্রেনের লভিভ অঞ্চলের ইয়াভোরিভ ঘাঁটিতে কৃষ্ণ সাগর থেকে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। ইউক্রেনের উত্তরে জাইতোমির অঞ্চলের গভর্নর ভিতালি বুনেচকো বলেন, অঞ্চলটির একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রুশ হামলায় ইউক্রেনীয় এক সেনা নিহত হয়েছেন।
তিনি জানান, জাইতোমির শহরের খুব কাছে একটি সামরিক অবকাঠামো ঘিরে রুশ বাহিনী প্রায় ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ও ধ্বংস করা হয়েছে। এদিকে পূর্ব-ইউক্রেনের দোনবাস প্রদেশের লুহানস্ক অঞ্চলের লিসিচানস্ক শহর চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনাবাহিনী। ফলে শহরটির হিরস্ক ও জোলোট এলাকায় আটকা পড়েছে প্রায় দুই হাজার ইউক্রেনীয় সেনা। শুক্রবার (২৪ জুন) এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান রুশ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা। ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রথম দিকে রুশ বাহিনীর লক্ষ্য ও পরিকল্পনা ছিল রাজধানী কিয়েভ দখল। কিন্তু দুই মাসের মাথায় সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে এবং পূর্বাঞ্চল দোনবাসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দেয়। সেই লক্ষ্যে গত মাসের শেষের দিকে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৪০টি শহর টার্গেট করে অভিযান শুরু করে পুতিন বাহিনী। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে (৭ জুন) রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু জানান, ইউক্রেনের সবচেয়ে পূর্বাঞ্চলীয় শহর লুহানস্কের ৯৭ ভাগ এলাকা রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। শহরটির পুরো দখল নিতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পুতিন বাহিনীর প্রধান টার্গেট সেভেরোদোনেৎস্ক ও লিসিচানস্ক শহর। লুহানস্ক অঞ্চলের এই দুটি শহরে এখনও কম-বেশি ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধ জারি ছিল। কিন্তু শুক্রবারই লুহানস্ক অঞ্চলের ইউক্রেনীয় গভর্নর সেরহি হাইদাই জানিয়েছেন, সেভেরোদোনেৎস্ক শহর থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শহরটি যে রুশ বাহিনীর দখলে চলে গেছে এর মাধ্যমে মূলত সেটাই স্বীকার করে নিল ইউক্রেন।