মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় পাটখড়ি বোঝাই একটি ট্রলারে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বাহাদুরপুর বাজার এলাকায় পদ্মা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। ট্রলারে থাকা এক শ্রমিক জাতীয় জরুরি পরিষেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে হরিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট তিনঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ট্রলারে থাকা কয়েকজন শ্রমিক ও মাঝি জানান, সকালে তারা রাজবাড়ি থেকে পাঁচটি ট্রলার বোঝাই করে পাটখড়ি নিয়ে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে হরিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর ঘাট এলাকায় পৌঁছালে বাহাদুরপুর বাজার থেকে তিনটি ট্রলারে করে ৯-১০ জন লোক একটি পাটবোঝাই ট্রলারের কাছে যায় এবং তিনহাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। তারা ২২০০ টাকা দেওয়ায় রাগান্বিত হয়ে দুর্বৃত্তরা মাঝি আক্কাসকে মারধর করে এবং গ্যাসলাইট দিয়ে পাটখড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। পরে তারা দ্রুত ট্রলার পাড়ে ভিড়ায়। ট্রলারে থাকা এক শ্রমিক ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে হরিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট তিনঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগুন লাগা ট্রলারে থাকা শ্রমিক সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাহাদুরপুর লাকা থেকে ছোট ট্রলারে করে ৯-১০ জন লোক প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করে। পদ্মায় চলাচলকৃত ট্রলার ও বল গেট থেকে তারা চাঁদা আদায় করে। দাবিকৃত চাঁদা না দিলে তারা মারধর করে।
এ অগ্নিকাণ্ডে তাদের ট্রলার পুড়ে ১০-১২ লাখ টাকা এবং ট্রলারে থাকা ১৫ লাখ টাকার পাটখড়ি পুড়ে গেছে।
মাঝি আক্কাস বলেন, ‘তারা (চাঁদাবাজ) নিয়মিত পদ্মায় চলাচলকৃত ট্রলার এবং বলগেট থেকে চাঁদা উঠায়। দাবিকৃত টাকা না দিলে তারা মারধর করে। আমরাও তাই বাধ্য হয়ে তাদের চাঁদা দিয়ে থাকি। আজকে তাদের দাবিকৃত টাকা থেকে কম টাকা দেওয়ায় মারধর করে এবং গ্যাসলাইট দিয়ে পাটখড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে।’
হরিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সকালে পৌনে ১০টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি পাটবোঝাই একটি ট্রলারে আগুন জ্বলছে। আমরা প্রায় তিনঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি।’
স্থানীয় কামাল হোসেন নামের এক কৃষক বলেন, ‘বাহাদুরপুর এলাকায় ৪-৫টি নৌকায় করে ৯-১০ জন লোক প্রতিনিয়ত পদ্মায় চলাচলকৃত বলগেট ও ট্রলার থেকে চাঁদা উত্তোলন করে।’
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ দেওয়া হলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। চাঁদাবাজির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি দেখার দায়িত্বনৌ-পুলিশের।’
ফরিদপুর কোতয়ালী নৌ-পুলিশের ইনচার্জ এস আই শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিষয়টা জানা নেই। কেউ আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগও দেয়নি।’