নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামানকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। নাটোরে ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম হত্যা মামলার প্রধান আসামি আসাদুজ্জামান। এ সময় এ মামলার অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারের দাবি করেছে বিক্ষোভকারীরা। শনিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে নাটোর শহরের কানাইখালি পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়।
কর্মসূচিতে নলডাঙ্গা ও নাটোর সদর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। নিহত জামিউলের বাবা ফরহাদ শাহ, মা জাহানারা বেগম, স্ত্রী রূপা খাতুন ও চার মাসের শিশুসন্তান রুপম আজীম মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনের শেষ মুহূর্তে যোগ দেন নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম।
সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন না। একটি বিশেষ মহলের আনুকূল্যে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের একটি অংশ তাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য করে। যদিও খুনের ঘটনার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ জামিউল ও তার পরিবারের সদস্যরা বংশানুক্রমে আওয়ামী লীগ করেন।’
শফিকুল ইসলাম এমপি বলেন, ‘ঘটনার ১২ দিন অতিবাহিত হলেও প্রধান আসামি আসাদকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। দল ক্ষমতায় থাকতেও যদি ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব না হয়, তাহলে তার বাবা–মাকে আমরা কী জবাব দেবো!’
গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে মসজিদের মাইক চুরির ঘটনায় সালিসে দোষী করা হয় উপজেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক জামিউল আলীমকে। জামিউল ফেসবুকে সে ঘটনার বিরুদ্ধে পোস্ট দিলে নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার ভাইয়েরা এসে মারপিট করে জামিউল আলীম ও তার বাবা ফরহাদ শাহকে গুরুতর আহত করে। সেদিনই তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চার দিন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকার পর ২৪ সেপ্টেম্বর জামিউলের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামানসহ আটজনের নামে মামলা করেন নিহত জামিউলের মা জাহানারা বেগম।
মানববন্ধন ও সমাবেশে জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এহিয়া চৌধুরী বলেন, ‘শুধু আসাদকে গ্রেপতার করলেই হবে না। তার আশ্রয়দাতাদেরও গ্রেফতার করতে হবে। খুনিরা তাদের হেফাজতেই রয়েছেন।’
নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম ফিরোজ বলেন, ‘খুনিরা যেন বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন, সে জন্য প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনে নামবেন।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আলীম সর্দার, আবদুল্লাহ আল সাকিব, জেলা যুব লীগের সাবেক সভাপতি মোস্তারুল আলম প্রমুখ।