ফিলিস্তিনের পক্ষে সব ধরনের প্রতিবাদ–বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে ফ্রান্স। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন বলেছেন, নিয়ম ভঙ্গকারী বিদেশী নাগরিকদের পদ্ধতিগতভাবে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে। একই সময়ে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের সময়ে ইহুদি বিদ্বেষ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ফ্রান্সসহ ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশ এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্যারিসের রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ ফিলিস্তিনিদের পক্ষে স্লোগান দিয়েছে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।
গতকাল প্রায় ৩ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল ফ্রান্সের প্রেস দে লা রিপাবলিকে। তারা ’ইসরায়েল হত্যাকারী’ ও ’ফিলিস্তিন জয়ী হবে’ স্লোগান দিয়েছে। সেখান থেকে অন্তত ১০জনকে আটক করেছে পুলিশ। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন বলেছেন, যারা জননিরাপত্তা ব্যহত করছে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। তবে বিক্ষোভকারীরা বলেছে, তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে সংহতি, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবে। এটি তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা।
শার্লট ভাটিয়ের নামের একজন বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ’আমরা নাগরিক আইনের দেশে বাস করি। এটি এমন একটি দেশ, যেখানে বিক্ষোভ করার অধিকার রয়েছে।’
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এক ভিডিও বক্তৃতায় জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ’আসুন আমরা আন্তর্জাতিক বিভাজনের সঙ্গে জাতীয় বিভাজন যোগ না করি। হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা ইসরায়েলের জনগণের মৃত্যু চায়।’
গত শনিবার ইসরায়েলে হামাসের হামলায় অন্তত ১৩ ফরাসি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, ’এখনও ১৭ জন ফরাসি নাগরিক নিখোঁজ রয়েছে এবং সম্ভবত গাজায় হামাসের হাতে জিম্মিদের মধ্যে রয়েছে তারা। নিখোঁজদের মধ্যে চার শিশুও রয়েছে। ফ্রান্স তাদের সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।’
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইহুদি বাস করে ফ্রান্সে। দেশটিতে প্রায় ৫ লাখ ইহুদি রয়েছে। আবার ফ্রান্সে মুসলিম সম্প্রদায়ের সংখ্যাও ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
এদিকে জার্মান সরকারও সে দেশে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে। বার্লিন পুলিশ বলেছে, ইহুদি বিদ্বেষ ও সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি এড়াতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।