বড় দুই দলের মহাসমাবেশ উপলক্ষ্যে ঢাকা ও আশপাশের
জেলায় চলাচলকারী বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন সরকারি দলের নেতাকর্মীরা।
বেশিরভাগ বাস তারা রিজার্ভ করে রেখেছেন।
শনিবার ওইসব বাসেই আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে আসার কথা রয়েছে।
অপরদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন
মহাসমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য তারা বাস রিজার্ভ করতে পারছেন না।
যাত্রীবাহী বাসে ঢাকায় প্রবেশ করতে পথে পথে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চেক করেছে।
এদিকে দুই বড় দলের মহাসমাবেশ ঘিরে পরিবহণ শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ কারণে শুক্রবার ঢাকার ভেতরে ও ঢাকার সঙ্গে দূরপাল্লার রুটে বাস চলাচল কম ছিল।
তবে স্বাভাবিক ছিল লঞ্চ চলাচল। একাধিক লঞ্চ মালিক জানান, শনিবারও তাদের লঞ্চ চলাচল করবে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির
সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যা বলেন,
পরিস্থিতি ভালো থাকলে শনিবার গাড়ি চলাচল করবে।
পরিস্থিতির অবনতি হলে মালিক-শ্রমিকরা তাদের নিরাপত্তার জন্য গাড়ি বন্ধ রাখতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার সাপ্তাহিক বন্ধের দিন থাকায় যাত্রী কম ছিল। তাই বাসও কম ছিল।
এছাড়া দুটি দলের সমাবেশের কারণে পরিবহণ শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে এনায়েত উল্যা বলেন,
‘বাস যে কোনো দল রিজার্ভ করতে পারে।
বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি বিপুলসংখ্যক বাস রিজার্ভ করেছে।
এবারও হয়তো এর ব্যতিক্রম হয়নি।’
একাধিক বাস মালিকের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়,
পরিবহণ খাতের দুই সংগঠন বাস মালিক সমিতি
এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের
নেতৃত্বে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা।
আওয়ামী লীগের সমাবেশে পরিবহণ শ্রমিকদের অংশ নিতে অনানুষ্ঠানিক নির্দেশনা দিয়েছেন তারা।
গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলীতে
অবস্থানরত বাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিবহণ শ্রমিকদের নির্দেশনা দিয়েছেন তারা।
গাজীপুর-গুলিস্তান রুটে চলা একাধিক বাস মালিক
বলেন, তাদের বাস সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা রিজার্ভ করে রেখেছেন।
শুক্রবার যাতে গাড়ি না চালাই সেই নির্দেশনাও দিয়েছেন।
এছাড়া পথে পথে পুলিশের তল্লাশির কারণেও মালিক-শ্রমিকেরা বাস চালাতে ভয় পেয়েছেন।
তাই এদিন গাড়ি চলাচল একপ্রকার বন্ধ করে রাখা হয়।
তারা আরও বলেন, বিএনপির নেতারা গাড়ি রিজার্ভ চাইলে ভয়ে তাদের দিচ্ছেন না পরিবহণ মালিকরা।
ঢাকা-বরিশাল রুটে চলা একটি বাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা
পরিচালক বলেন, শনিবার দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে যাত্রী পেলে বাস চালাবেন।
বাস চলাচল বন্ধ রাখার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
সহিংসতা হলে তাৎক্ষণিক গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বড় দুই দলের সমাবেশ থাকলেও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ঢাকার সদরঘাট থেকে বিভিন্ন রুটে ৩৭টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে।
একই সময়ে বিভিন্ন জেলা থেকে ৪৫টি লঞ্চ ঢাকায় এসেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা জানান,
লঞ্চ চলাচল সচল বা বন্ধ রাখার বিষয়ে প্রশাসনিক
বা রাজনৈতিক কোনো নির্দেশনা তারা পাননি।
লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা।
সদরঘাটসহ নদী বন্দরগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।