ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভেরম্যানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব প্রদর্শনের জন্য পুলিশ বাহিনীকে দোষারোপ করার প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সোমবার তাকে বরখাস্ত করলেন।
অবিলম্বে তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব জেমস ক্লেভারলি। তবে ক্লেভারলির স্থলাভিষিক্ত কে হবেন তা জানানো হয়নি।
ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ঋষি সুনাকের কর্তৃত্বের সমালোচনা করার অপরাধে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) সরকারি একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। ব্র্যাভারম্যান সুনাকের মন্ত্রিসভার অন্যতম সিনিয়র সদস্য ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে লন্ডনে ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান। এই সময়ে ঋষি সুনাকের কর্তৃত্বকেও অস্বীকার করেন তিনি।
সমালোচকরা বলেছেন, সুয়েলা ব্র্যাভারম্যানের অবস্থান ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ নিয়ে চলমান উত্তেজনা আরো বাড়িয়েছে এবং ডানপন্থী বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় নামতে উৎসাহিত করেছে। মূলত এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য চাপে পড়েন সুনাক।
উল্লেখ্য, ইসরাইল–হামাস সঙ্ঘাত নিয়ে শনিবার (১১ নভ্ম্বের) লন্ডনের রাস্তায় ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করেন তিন লাখেরও বেশি মানুষ। কিন্তু সেখানে ডানপন্থী বিক্ষোভকারীরা অতর্কিত হামলা চালানোয়, শতাধিক বিক্ষোভকারীকে (ডানপন্থী) গ্রেফতার করে লন্ডন পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের থামাতে অপর এক বিক্ষোভকারী দল মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
এ হামলার নিন্দা জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান ফিলিস্তিনিদের পক্ষে লাখো জনতার এ বিক্ষোভ সমাবেশকে আখ্যায়িত করেন ঘৃণ্য সমাবেশ হিসেবে।
ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ বন্ধ করে দিতে লন্ডন পুলিশকে অনুরোধও জানিয়েছিলেন তিনি। এক্ষেত্রে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সমালোচনা করায় এমন সিদ্ধান্তের সম্মুখীন হন তিনি।
গত শনিবার গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধের দাবি জানিয়ে লন্ডনে তিন লাখের বেশি লোক সমবেত হয়। তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কট্টর ইসরাইলপন্থী হিসেবে পরিচিত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো বিক্ষোভকারীদের আইন লঙ্ঘনকারী এবং ‘ঘৃণার মিছিলকারী’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো লোকদের সমবেত হওয়ার সুযোগ দানের জন্য পুলিশের তীব্র সমালোচনা করেন।
পুলিশকে আক্রমণ করে সুয়েলার এই বক্তব্য সরকার ও বিরোধী কোনো দলই ভালোভাবে নেয়নি। উভয় পক্ষই তার বক্তব্যকে ‘আক্রমণাত্মক’ এবং ‘জ্বালাময়ী’ হিসেবে অভিহিত করে।
৪৩ বছর বয়স্কা সুয়েলা ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মন্ত্রী। তার মা-বাবা যথাক্রমে কেনিয়া ও মরিশাস থেকে ব্রিটেনে অভিবাসন করেছিলেন।
সূত্র : বিবিসি, স্কাই নিউজ এবং অন্যান্য