গত ১৯ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস গ্রেপ্তার হবার পর আরেক সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আজ ২৪ অক্টোবর, শনিবার সকালে মহানগর পুলিশ লাইনস থেকে হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিলেটে পুলিশি হেফাজতে মো. রায়হান আহমদের (৩৪) নিহত হওয়ার ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিৎ করেন সিলেটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান।
পুলিশ সুপার আরও জানান, “তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।”
উল্লেখ্য যে, এর আগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে ১৯ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
ঘটনার প্রেক্ষাপটে পিবিআই জানায়, গত ১০ অক্টোবর শনিবার দিবাগত রাতে আনুমানিক তিনটার দিকে সিলেটের কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে রায়হানকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয় এবং নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যু হয়।
রায়হানের মৃত্যুতে তাঁর স্ত্রী তাহমিনা আক্তার পরের দিন থানা পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। কিন্তু মামলায় কোন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি।
মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্তে নামেন। তদন্তে ওই ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁঞাসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে। তাঁদের মধ্যে হারুন অর রশিদও ছিলেন। বরখাস্ত এসআই আকবর হোসেন গত ১৩ অক্টোবর থেকে পলাতক আছেন।
অতঃপর মামলাটির তদন্তভার পুলিশ থেকে পিবিআইয়ে হস্তান্তর হলে রায়হানের লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয়।
পিবিআই সূত্রে আরও জানা যায় যে, “নির্যাতনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ফাঁড়ির ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও গায়েব, তথ্য গোপন করাসহ এসআই আকবরকে পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ২১ অক্টোবর ফাঁড়ির ‘টু-আইসি’ পদে থাকা এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।”
পুলিশ হেফাজতে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় ‘বৃহত্তর আখালিয়া সংগ্রাম পরিষদ’ নামে এলাকাবাসীর সম্মিলিত মোর্চা প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে তৎপর। নির্যাতনের মূল হোতা পলাতক এসআই আকবরসহ জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিকেলে আখালিয়া পাশের মদিনা মার্কেট পয়েন্টে মানববন্ধন করবে সংগ্রাম পরিষদ।
উল্লেখ্য, রায়হান নগরীর একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্রে চাকরি করতেন। তিনি স্ত্রী, আড়াই মাস বয়সী এক মেয়ে ও মা সহ আখালিয়ার নিহারিপাড়ার বসবাস করতেন।
