তিন দিনের সফরে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দুদেশের মধ্যে বিভিন্ন খাতে বেশ কয়েকটি বিনিয়োগ ও বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
সৌদি সফরের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) ছয় সদস্যবিশিষ্ট গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি)-এর রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করার কথা রয়েছে তার।
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সৌদি রয়্যাল গার্ড শির গাড়ি পাহারা দিয়ে আল ইয়ামামা প্রাসাদে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানান যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। দেয়া হয় গার্ড অব অনার। পরে দুজন বৈঠকে বসেন।
তাদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর দুদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। বেইজিং দীর্ঘদিন ধরেই রিয়াদের বড় ধরনের বাণিজ্য সহযোগী।
চীন সৌদি তেলের প্রধান ভোক্তা। সৌদি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, শি জিনপিং বলেছেন, আরব বিশ্ব, উপসাগরীয় উপসাগরীয় আরব দেশ এবং সৌদি আরবের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের নতুন যুগের সূচনার উদ্দেশ্যে তার এ সফর।
শি জিনপিং বলেন, ‘আমি ছয় বছর পর আবার সৌদি আরব সফর করছি। ছয় বছরে আমি দেখেছি যে সৌদি আরব অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈচিত্র্যের সংস্কারের মাধ্যমে ইতিবাচক অগ্রগতি নিয়ে নতুন চেহারা নিয়েছে।
চীনা রাষ্ট্রপতি বলেন, বাদশাহ সালমানের নেতৃত্বের ওপর বিশ্বাস রয়েছে আমার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-সৌদি আরব সম্পর্কের উন্নয়ন বজায় রয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে চীন এগিয়ে রয়েছে। চীন-সৌদি আরব কৌশলগত অংশীদারত্বের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে চাই।’
পরে বাদশাহ সালমানের সঙ্গে দেখা করেন চীনা প্রেসিডেন্ট। দুজনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে কথোপকথনের পর তারা সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
এই সফরে দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি, প্রযুক্তি, চিকিৎসা, আবাসনসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য চুক্তি সই হয়েছে।
শুক্রবার জিসিসির রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করার কথা রয়েছে শি’র। জিসিসি সম্মেলনের ফাঁকে মিশর, ফিলিস্তিন, সুদানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট বৈঠক করবেন।
চীনের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক থাকা যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র সৌদি আরব। তবে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে ওয়াশিংটন-রিয়াদ সম্পর্ক কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়ে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বৈরিতা থাকলেও সৌদি আরব চীনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
করোনাকালে দুদেশেরই অর্থনীতি হোঁচট খায়। এ অবস্থায় অর্থনীতি চাঙা করতে সৌদির সঙ্গে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করতে চাইছে চীন। তবে দুই দেশের এই কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার উদ্বেগ বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। শি’র সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, এ সফর বিশ্বজুড়ে চীনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার বড় উদাহরণ।