সম্প্রতি ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের হামলার মূল টার্গেট পুলিশের উপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ থানায় বসানো হচ্ছে এলএমজি চৌকি বা হালকা মেশিনগানসহ নিরাপত্তা চৌকি। স্বাধীনতা পরবর্তি ইতিহাসে এধরনের পুলিশের নিরাপত্তা কার্যক্রম এই প্রথম। বিশেষ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রনকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে বিভিন্ন কথিত ধর্মীয় উগ্রবাদী ইসলামী দলগুলোর দেশব্যাপী ধ্বংশাত্মক কার্যকলাপ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে প্রশাসনের এধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় জেলা সিলেট মহানগরীর সব থানায় এলএমজি চৌকি বা হালকা মেশিনগানসহ নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, এই জেলার সবকটি থানাতেই নিরাপত্তা চৌকি বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।
সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মুহাম্মদ লুৎফর রহমান বলছেন দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের ওপার হামলা হয়েছে, তার প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়ছে। তিনি জানিয়েছেন ১১টি থানাতেই এধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ বলছে, মূলত চারদিকে বালির বস্তা দিয়ে বাংকারের মতো করে এসব চৌকি স্থাপন করা হচ্ছে যার ভেতরে মেশিনগান সহ পুলিশ সদস্য অবস্থান করছেন। মেশিনগান গুলোর টাইপ-৫৬ এর রেট অব ফায়ার ৬৫০, ইফেক্টিভ রেঞ্জ ১ কি.মি বলে জানা যায়।
এর আগে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন ডিসি তোফায়েল আহমেদ বলেছেন পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিরাপত্তার জন্য এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
“সারাদেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে থানা ও সরকারি সম্পত্তির সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য ছয় থানায় এলএমজি চৌকি স্থাপন করা হয়েছে,” বলছিলেন তিনি।
এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজী হন নি।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে হাটহাজারি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ কয়েকটি জায়গায় থানাসহ সরকারি স্থাপনায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিশেষ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজত ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক কিছু দলের বিরোধিতার জের ধরে সহিংসতার সময় সরকারি নানা স্থাপনায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ঘোষিত লকডাউন কার্যকর করা নিয়েও নানা জায়গায় সংঘর্ষ হয়েছে এবং এর মধ্যে ফরিদপুরের সালথায় সরকারি অফিসে হামলা হয়েছে।
মূলতঃ এসব নানা ঘটনার পর পুলিশ প্রশাসনে নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার খবর স্থানীয় গণমাধ্যমে আসছিলো।
তবে সিলেটের এই এলএমজি চৌকির সাথে তার কোন সম্পর্ক আছে কি-না তা নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোন মন্তব্য করা হয়নি।