সম্প্রতি হেফজতে ইসলামের সহিংস দেশ তান্ডবের মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে একের পর এক শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতারা গ্রেপ্তার হচ্ছেন। তাদের কেউ কেউ দেশকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে অভিযুক্ত, কেউ কেউ পাকিস্তানের জঙ্গিবাদের সাথে মিলে সরকার উৎখাতের চেষ্টার কথাও স্বীকার করেন পুলিশের রিমান্ডে।
এবার রিমান্ডে পুলিশের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন গ্রেপ্তারকৃত শীর্ষ হেফাজত নেতারা। তারা জানান, প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গা দীর্ঘদিন ধরে হাটহাজারী মাদ্রাসায় স্থায়ীভাবে গোপনে বসবাস করছে। তাদের একটি অংশ মাদ্রাসার মেস বা ডাইনিংয়ে কাজ করে, একটি অংশ মাদ্রাসা পাহারা দেয় ও একাংশ মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে বলে তথ্য দেয় গ্রেপ্তারকৃত হেফাজত নেতারা। মাদ্রাসায় তাদের বসবাসের বিষয়টি অত্যন্ত কঠোরভাবে গোপন করা হতো।
এবার মুজিব শতবার্ষিকীতে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধীতা করে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে কিছু কট্টর মৌলবাদ গোষ্ঠী নারকীয় ধ্বংশযজ্ঞ চালায় সারা দেশব্যাপি। চট্টগ্রামে জ্বালাও পোড়াও কর্মকান্ডে এসব রোহিঙ্গাদের প্রায় সবাইকে নামানো হয়েছিলো।
গ্রেপ্তারকৃত হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশের কাছে জানায় আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। তার জানায়, নরেন্দ্র মােদির ঢাকা সফরের প্রথম দিন ২৬ মার্চ হেফাজতের তাণ্ডবের সময় চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানা দখলে নেওয়ার নির্দেশ ছিল হেফাজত নেতাদের। যেকোন মূল্যে থানা দখলের বিষয়টি নিয়ে নীতিগত ভাবে সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু কোনভাবেই হেফাজতের ব্যানার ব্যবহার করা যাবে না। এসব রোহিঙ্গাদের উপর দেয়া হয়েছিলো হাটহাজারি থানা দখলের দায়িত্ব। সে কারনে থানা দখলের দায় যাতে হেফাজত নেতাদের ওপর না পড়ে এই কারণে তারা ওই দিন হেফজতের কোনাে ব্যানার ব্যবহার করেনি। গ্রেপ্তারকৃত হেফাজত নেতারাই এ কথা স্বীকার করেন বলে জানিয়েছেন প্রশাসন।
হাটহাজারী থানা দখলের ঘটনায় প্রায় ৫০ জন হেফাজত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ। পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ওই ঘটনার ২ দিন আগেই নেতারা মাদ্রাসা ছাত্রদের নির্দেশনা দেন যেভাবেই হােক আক্রমণ করে হাটহাজারী থানা দখলে নিতে হবে। কিন্তু হেফাজতের কোনাে ব্যানার ব্যবহার করা যাবে না। তবে পুলিশের প্রস্তুতি থাকায় তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি।
