পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর আশে পাশের এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আজ বৃহস্পতিবার গভীর রাতেই ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে মনে করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘মিধিলি’।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, , ‘আমাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আজ রাতের মধ্যেই গভীর নিম্নচাপটি আরও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।’ এটি বাংলাদেশের দিকেই আসছে।
আজিজুর রহমান বলেন, এখন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে বা শনিবার ভোরে এটি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলেও এটি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হবে না বলে মত দেন এই আবহাওয়াবিদ।
তিনি আরও বলেন, ‘কাল ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়ে ধীরে ধীরে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে থাকবে।’ গভীর নিম্নচাপের কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। তবে এটি দমকা হাওয়া আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে প্রাণহানি এবং বসতবাড়ি ও ফসলও নষ্ট হয়। এরপর আবার নতুন আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার কথা জানাল আবহাওয়া অফিস।
আজ আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি আরো উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।এটি আরো উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপটির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের উপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী ( ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপের কেন্দ্র ও আশে পাশে সাগর উত্তার থাকায় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোতে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে থাকা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।