মুন্সীগঞ্জে দশম শ্রেণী ছাএীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে মুন্সীগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফায়জুন্নেসা চাঞ্চল্যকর কিশোরী লায়লা আক্তার লিমু হত্যা মামলায় এই রায় দেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) লাবলু মোল্লা।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামী মো. খোকন (৩৫) সিরাজদিখান উপজেলার পাউসার গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক।
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালী বাজারে চাঁন সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ‘দর্জি ঘর’ নামে একটি দোকানের মালিক ছিল খোকন।
পিপি লাবলু মোল্লা জানান, ২০১৮ সালের ২৮ অগাস্ট বিকালে খোকনের ‘দর্জি ঘর’ এ পোশাক বানাতে যান কিশোরী লায়লা আক্তার লিমু।
১৭ বছরের লিমু বাড়ৈখালি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
ঘটনার দিন খোকন কৌশলে কিশোরী লিমুকে আটকে রেখে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
পরে লাশ গুম করার জন্য লিমুর মরদেহ বস্তাবন্দি করে পাশের ইছামতি নদীতে ফেলে দেয়।
ঘটনার তিন দিন পর ৩১ অগাস্ট লাশ উদ্ধারের পর সন্দেহজনক খোকনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয়রা।
গ্রেপ্তারের পর আদালতে নিজের মালিকানাধীন দর্জি দোকানে লিমুকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুম করার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় খোকন।
তার দোকানে জমাটবদ্ধ রক্তও দেখা যায়।
এ ঘটনায় লিমুর বাবা বাড়ৈখালী গ্রামের আব্দুল মতিন মিয়া বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার প্রায় তিন বছর পর বাদী মারা যান।
পরে লিমার বড়ভাই রিপন মিয়াসহ মোট ২০ জনের সাক্ষ্য এবং আসামির সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার এই রায় প্রদান করা হয়।
লাবলু আরও জানান, জনাকীর্ণ আদালতে রায়ের সময় আসামি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে লাশ গুম করার দায়ে ২০১ ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও সাত হাজার টাকা জরিমানার রায় প্রদান করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক।
আসামির বাবা বাবুল মিয়া জানান, এই রায়ের ব্যাপারে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন তারা।
অন্যদিকে আদালতে উপস্থিত লিমুর বড় ভাই রিপন মিয়া ও ফুফু নাসিরন বেগম এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানান পিপি লাবলু।
