ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ এরফান সেলিমের বিরুদ্ধে নৌবাহিনী অফিসারকে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগে মামলা ও এরফান সেলিম সহ মামলার সকল আসামীর গ্রেফতার হবার পর থেকে হাজী সেলিম পরিবারের একের পর এক কুকির্তী বের হয়ে আসছে জনসম্মুখে।
গত মে মাসে দখল হওয়া অগ্রণী ব্যাংকের মালিকানাধীন মৌলভীবাজার এলাকায় ১৪ শতক জায়গা সোমবার (২৬ অক্টোবর) আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর কোন সহায়তা ছাড়াই ব্যাংকের কর্মকর্তারা হাজী সেলিমের দেওয়া সীমানা প্রাচীর ভেঙে ব্যাংকের জমি বুঝে নিয়েছেন। আর এভাবেই উদ্ধার হয় পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার এলাকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের দখলে থাকা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকের জমি।
এবার বর্তমান সরকার দলীয় সাংসদ হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে পাওয়া গেল প্রতিবন্ধিদের জমি দখল করে রাখার অভিযোগ।
প্রতিবন্ধীদের স্কুলের জন্য সরকারের বরাদ্দ দেয়া জায়গা সাংসদ হাজী সেলিম অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৫ বছর লালবাগে প্রতিবন্ধীদের এক একর জমি তার দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষের। সরকারিভাবে তিনবার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েও দখলমুক্ত হয়নি জমিটি। ওই জায়গায় গড়ে উঠেছে হাজী সেলিমের মদিনা ফিলিং স্টেশন।
শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধিদের ইশারা ভাষায় পড়াশোনার জন্য জাতীয় বধির সংস্থার তত্বাবধানে রাজধানীর বিজয় নগরে একটি স্কুল পরিচালিত হয়। যেখানে শিক্ষার্থী আছে ৩০০। সেই স্কুলের পরিধি বাড়াতে ২০০৫ সালে রাষ্ট্রপতি রাজধানীর লালবাগ এলাকায় ১ একর সরকারি খাস জমি বধির সংস্থাকে বরাদ্দ দেয়।
কিন্তু বধির স্কুলের সেই জমি দখল করে নেন সংসদ সদস্য হাজি সেলিম। দুই দফা জমি উদ্ধার করে বধির স্কুলকে বুঝিয়ে দেয় ঢাকার জেলা প্রশাসন। কিন্তু আবারো দখল করেন তিনি।
লালবাগের ওই জমিতে গিয়ে দেখা যায় সেখানে গড়ে উঠেছে হাজী সেলিমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-মদিনা গ্রুপের একটি পেট্রোল পাম্প, একটি অফিস, কয়েকটি দোকান ও গুদাম।
হাজী সেলিম জমিটি দখলের পর মামলা করলেও সেই মামলার রায়ও বধির স্কুলের পক্ষে গেছে কিন্তু তারপরও জমিটির দখল ছাড়েনি হাজী সেলিম।
সদ্য যোগ দেয়া ঢাকার জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রতিবন্ধিদের জমি দ্রুতই দখলমুক্ত করা হবে।
এর আগে অগ্রণী ব্যাংকের মালিকানাধীন জায়গা হাজী সেলিমের অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করা প্রসঙ্গে গত ২৬ অক্টোবর ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর ব্যাংকের শাখাটিও বন্ধ ছিল। এখানে দায়িত্বরত নিরাপত্তা প্রহরী ভোল্ট পাহারা দিতে ভেতরে অবস্থান করে। সেই সুযোগে চলতি বছরের মে মাসে আমাদের পুরোনো ভবনটি গুড়িয়ে দিয়ে দখলে নেয় হাজী সেলিম। আজ আমরা সীমানা প্রাচীরের গেটের তালা ভেঙে তা দখলে নিয়েছি। পুরাতন ভবনে ব্যাংকের অনেক সরঞ্জাম ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল বলে উচ্ছেদ অভিযানের সময় উপস্থিত ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
