চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার শতবর্ষী নাজিরহাট বড় মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার হয়ে ঐ মাদ্রাসার পাশে একটি নতুন “মাদ্রাসা আবিষ্কার” করলেন বহুল আলোচিত-সমালোচিত হেফাজত নেতা মৌলানা সলিম উল্লাহ। শনিবার সকালে তিনি নাজিরহাট পৌরসভার ডাইনজুরী রাস্তার মাথা এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে নতুন এ মাদ্রাসার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, নাজিরহাট পৌরসদরের আজম রোড সংলগ্ন একটি তিনতলা ভবন ভাড়া নিয়ে তিনি এ মাদ্রাসা আবিষ্কার করে রবিবার থেকে এটির কার্যক্রম শুরু করেছেন । মাদ্রাসাটির নামকরণ করা হয়েছে-“আল-জামিয়াতুল ফারুকীয়া নাজিরহাট মাদ্রাসা”। এছাড়াও, মাদ্রাসাটিতে যুক্ত হয়েছেন নাজিরহাট বড় মাদ্রাসা থেকে সলিম উল্লাহর সাথে বহিষ্কৃত ১২ শিক্ষকও।
উল্লেখ্য, গত কিছুদিন আগে নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার মুহতামিম (পরিচালক) পদ নিয়ে দু’ পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে মারামারি, ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া, মামলা মোকাদ্দমার ঘটনাও ঘটে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ‘মুহতামিম’ দাবিদার মাওলানা সলিম উল্লাহ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ২৪ অক্টোবর দুপুরে। ওই দিন ছাত্রদের একাংশ মাওলানা সলিমুল্লাহকে ‘মুহতামিম মানি না, শূরা চাই, শূরা চাই’ মর্মে স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে ছাত্রদের একটি অংশ স্লোগানধারীদের সরিয়ে দিতে চাইলে উভয়পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। এরপর সলিম উল্লাহ অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত মাদ্রাসার পিছনের ফটক দিয়ে চটকে পড়েন।
ওইদিন সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘শূরা বৈঠক’ হবে জানিয়ে আশ্বস্ত করেন। সেই আলোকে ২৮ অক্টোবর শূরা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ঐদিন শূরা কমিটির বৈঠকে মৌলানা সলিম উল্লাহসহ ১৩ শিক্ষককে বহিস্কার করে মৌলানা হাবিবুর রহমান কাসেমীকে মুহতামিম মনোনীত করা হয়।
এদিকে, মৌলানা সলিম উল্লাহ তড়িগড়ি করে বহিষ্কারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে নতুন মাদ্রাসা আবিষ্কার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তাঁকে (সলিম) নিন্দা ও ধিক্কার দেয়ার ঝড় উঠে। এছাড়া,শতবর্ষী ঐ মাদ্রাসার অনতিদূরে নতুন মাদ্রাসা চালু নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বড় মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, বহিষ্কৃত উক্ত সলিম উল্লাহর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তিনি মাদ্রাসার জন্য বিদেশে অর্থ সংগ্রহ করার জন্য যাওয়ার সময় ২৭ টি রশীদ বহির ২ হাজার ৭’শ রশীদ মূলে সংগৃহীত টাকার হিসাব প্রদান করেননি।অথবা রশীদ বহিগুলো বার বার তাগাদা দেয়া সত্বেও হিসাব বিভাগে জমা করেননি।
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে আরো জানা যায়,উক্ত সলিম উল্লাহ কতিপয় ব্যবসায়ীকে মোটা অংকের অর্থ স্বল্প মুনাফায় বিনিয়োগ দিয়েছেন। তবে, টাকার অংক কত হতে পারে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গেল ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত শূরা কমিটির বৈঠকে আগামী এক মাসের ভেতর উক্ত সলিম উল্লাহর সমুদয় হিসাব-নিকাস হিসাব বিভাগে জমা প্রদান করার নির্দেশ দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।