গণসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ শুরু করে গণঅধিকার পরিষদ। সোমবার (১ জানুযারি) বেলা পৌনে ১২ টায় কাকরাইল মোড়, সেগুনবাগিচা এলাকায় লিফলেট বিরতণ ও গণসংযোগ শেষে প্রেসক্লাবে সংক্ষিপ্ত পথসভা করে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।
প্রেসক্লাবে সংক্ষিপ্ত পথসভায় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন,” ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিনে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে অগ্রীম ধন্যবাদ দিতে পারি যে, তিনি টানা চতুর্থবারের মত একটি কর্তৃত্ববাদ রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। আমরা তাকে আরও ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তিনি অবকাঠামো উন্নয়ন করেছেন। কিন্তু উন্নয়ন মানে কি শুধুই মেট্রোরেল, ব্রিজ, কালভার্ট? জনগণের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন কোথায়? আজকে রাষ্ট্রে গুম খুন, নির্যাতন, দমনপীড়ন। আওয়ামীলীগ গণতন্ত্রকে ১৪ ও ১৮ সালে গলাটিপে হত্যা করেছে। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে তারা ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসলো, সেটি কেনো ১১ সালে বাতিল করলো? কারণ তারা দেখেছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে বারবার ক্ষমতায় আসা যায় না।
এইবার ২৪ সালের একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে তারা গণতন্ত্রের দাফন করতে চায়, কিন্তু এদেশের জনগণ সেটি হতে দিবে না। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেছিলো, ঢাকাকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে, নির্বাচনে যাবো না। জিএম কাদেরের সহধর্মিণীকে ঢাকা থেকে একটি আসন দিয়ে যখন আলো ফুটালো সরকার। তখন তিনি নির্বাচনে গেলেন। সহধর্মিণীর প্রতি তার এই চমৎকার ভালবাসা যে, তাকে নৌকায় না নিয়ে পার হলেন না।
তিনি আরও বলেন, আজকে দেশের যে সমস্যা, এর মূলে জাতীয় পার্টি, তারপর আওয়ামী লীগ। দুই স্বৈরাচার মিলে দেশে মহা-স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ভোট চাইতে গেলে পাগলও হাসে। অথচ গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, বিএনপি নয়, বিরোধীদল বলতে নাকি জাতীয় পার্টিকে বোঝায়। জাতীয় পার্টিকে জনগণ জাতীয় বেইমান পার্টি মনে করে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার গতকাল বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা ধ্বংস হবে। নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এতোই যদি বুঝেন, তাহলে কেনো একতরফা নির্বাচন বন্ধ করছেন না? বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নৌকার প্রার্থী শাহজাহান ওমর বলেছেন, ৬০-৭০% ভোট কাস্টিং না হলে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আসবে। ইতোপূর্বে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দুর্ভিক্ষ হবে। তাহলে কেনো এই ডামি নির্বাচন? আমরা আজকে বছরের প্রথম দিনে আহ্বান করছি, দেশ ও জনগণের প্রতি ভালবাসা থাকলে, সংলাপে বসুন, সমঝোতায় আসুন। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করুন, তখন আমরাও নির্বাচনে যাবো।
দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসন থেকে এদেশের মানুষ মুক্তি চায়। এই সরকারের পাতানো নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ৯ জন খুন এবং আহত হয়েছেন ১ হাজারের অধিক। শুধু মাত্র গত ডিসেম্বর মাসেই ১৫ জন রাজনৈতিক কর্মী কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। রিমান্ডের নামে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ৬ জনকে। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। তাই দেশ এবং দেশের মানুষকে বাঁচাতে এই স্বৈরাচার সরকারকে যে কোনো মূল্যে বিদায় করতে হবে। তবেই মিলবে মুক্তি।
উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামান বলেন, জনসমর্থনহীন সরকার একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ভোট ব্যবস্থাকে নির্বাসনে পাঠিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। জনগণ একতরফা এই ভূয়া নির্বাচন প্রত্যাখান করেছে। আমাদের নতুন বছরের অঙ্গিকার, মুক্ত করবো স্বৈরাচার।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম ফাহিমের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ছাত্র অধিকার পরিষদে সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব, যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এ্যাড. নাজিম উদ্দিন। গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন, গণঅধিকার পরিষদ এর উচ্চতর পরিষদ সদস্য জসিম উদ্দিন আকাশ, সহ-সভাপতি বিপ্লব কুমার পোদ্দার, ক্রীড়া সম্পাদক ইলিয়াস মিয়া, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি তারিকুল ইসলাম, যুব অধিকার পরিষদ এর সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন প্রমুখ।