ঢাকামঙ্গলবার , ১৪ নভেম্বর ২০২৩
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও মেয়াদ বাড়ছে ব্যয়বহুল ভাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ১৪, ২০২৩ ৪:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় অর্ধেক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ব্যয়বহুল ভাড়া বিদ্যুত কেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে সরকার।

সর্বশেষ গত ৮ নভেম্বর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রিসিশন এনার্জি লিমিটেডের ৫৫ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের সাথে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানো হবে।

বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) আওতায় বিপিডিবি প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় ৫ দশমিক ৭ মার্কিন ডলার (প্রায় ৬ টাকার সমতুল্য) হারে বিদ্যুৎ কিনবে এবং বেস লোড প্ল্যান্ট থেকে প্রায় অর্ধেক দামে বিদ্যুৎ কিনবে।

উদাহরণস্বরূপ, সরকার সামিট-জিই’র বিবিয়ানা ৪৫০ মেগাওয়াট গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ২২ বছরের জন্য প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টায় ৩ দশমিক ৩২ টাকায় বিদ্যুৎ কিনছে।

সরকার ২০২১ সালের অক্টোবরে একটি পিপিএ অনুমোদন করে। এর অধীনে (১) এড্রা পাওয়ার হোল্ডিংস এসডিএন বিএইচডি, মালয়েশিয়া এবং (২) উইনিভিশন পাওয়ার লিমিটেড, বাংলাদেশ ৬৬০ মেগাওয়াট বেস-লোড কম্বাইন্ড সাইকেল প্ল্যান্ট স্থাপন করবে এবং বিপিডিবি ২২ বছরের চুক্তিকালীন সময়ে স্থানীয় গ্যাস চালিত প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় ৩ দশমিক ৬৭৯ মার্কিন ডলার (২ দশমিক ৯৪ টাকা সমতুল্য) মূল্যে বিদ্যুৎ কিনবে।

ভাড়া এবং কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোর চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর পদক্ষেপটির বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা অবাক হয়েছেন।

অনেক বিশেষজ্ঞ এবং বিদ্যুৎ শিল্পের অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা মনে করেন ব্যয়বহুল রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো উপভোগ করা অব্যাহত রাখার এই পদক্ষেপটি সরকারের উপর আরো ভর্তুকি দেয়ার বোঝা বাড়াবে। এটি এমন একটি সময়ে যখন এই খাতটি ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্বৃত্ত ক্ষমতা প্রায় ৫০ শতাংশে পৌঁছানোর সাথে বিশাল ক্ষমতা প্রদানের বাধ্যবাধকতার মুখোমুখি হয়েছে।

গত বছর সরকার ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ -এর নতুন বিধান দিয়ে কমপক্ষে ১০টি রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করলেও ভাড়া বিদ্যুতে কেন্দ্রের মালিকদের পরিশোধের জন্য ৬ হাজার ৫৬৪ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখেছিল।

আশুগঞ্জ গ্যাসভিত্তিক প্রিসিশন এনার্জির ৫৫ মেগাওয়াট রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের সর্বশেষ সম্প্রসারণ প্রস্তাব অনুমোদনের সময় এবারো বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ২০৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা আগামী ৫ বছরের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অফ-গ্রিড নবায়নযোগ্য ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ মিলিয়ে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ২৭ হাজার ৮৩৪ মেগাওয়াট এবং একদিনে সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট।

বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, গত ২৬ সেপ্টেম্বর দেশে ১৪ হাজার ২১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে এবং অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে ১১৩ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়েছে।

শীত আসার সাথে সাথে চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে এবং ৮ নভেম্বর দেশের বিদ্যুতের চাহিদা ১০ হাজার ৯৫৪ মেগাওয়াট রেকর্ড করা হয়েছিল এবং অন-গ্রিড ইনস্টলড ক্ষমতা ২৫ হাজার ৩৩৯ মেগাওয়াট দেখানো হয়েছিল যার অর্থ উদ্বৃত্ত ক্ষমতা দ্বিগুণেরও বেশি ছিল ১৪ হাজার ৩৮৫ মেগাওয়াট।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, গত বছর ১০টি রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সময় বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় ‘জরুরি প্রয়োজনে’ চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।

তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘গ্যাসের ঘাটতি থাকায় চাহিদা মেটাতে আমাদের পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে তরল জ্বালানিভিত্তিক রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, এই প্ল্যান্টগুলো সরকারকে ‘ক্যাপাসিটি পেমেন্ট’ করতে বাধ্য করে না – অর্থাৎ অব্যবহৃত বিদ্যুতের জন্য অর্থ প্রদান, এটি পূর্ববর্তী কিছু চুক্তির ক্ষেত্রে ছিল। নসরুল হামিদ বলেন, ‘ফলে এসব বর্ধিত রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুতের দাম মূল খরচের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমেছে।’

সরকারি নথিতে দেখা যায়, গত বছরের মার্চে অনুমোদিত ৫টি প্লান্টের মধ্যে তিনটি সামিট গ্রুপের, একটি ডাচ-বাংলা গ্রুপের এবং একটি ওরিয়ন গ্রুপের।

‘প্রথমে ভুল স্বীকার করুন’

দেশের ক্রমবর্ধমান উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ এবং রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, ‘বেসরকারি খাতের ক্যাপাসিটি পেমেন্টের চাপ বাড়তে থাকবে এবং প্রাথমিক জ্বালানি আমদানি বাড়বে। পরিশেষে, এটি জ্বালানি নিরাপত্তাহীনতার দিকে পরিচালিত করবে।’

তিনি বলেন, এ অবস্থায় একমাত্র উপায় হচ্ছে, সরকারকে প্রথমে স্বীকার করতে হবে যে- চাহিদা বিবেচনা না করেই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বেসরকারি খাতকে অনুমতি দিয়ে তারা ভুল করেছে এবং তারপর বর্তমান নীতি ও কৌশল পরিবর্তন করতে হবে।

তা না হলে আবারো বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপ আসায় পরিস্থিতি সামাল দেয়া আরো কঠিন হয়ে পড়বে। যদি তাই হয়, তাহলে মুদ্রাস্ফীতি আরো বাড়ার আশঙ্কা করেন আলম।

সূত্র : ইউএনবি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।