ঢাকারবিবার , ১ নভেম্বর ২০২০
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ

ফটিকছড়ির জমিদার বাড়ী–যেখানে ফাঁসিতে ঝুলানো হতো অপরাধীদের।

ইউনুস মিয়া, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।।
নভেম্বর ১, ২০২০ ১০:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ষাট কক্ষের প্রাসাদ,চারপাশে পরিখা, লালবাগ কেল্লার আদলে তৈরী ফটক। প্রাসাদের প্রতিটি কক্ষের কার্নিশ, দেয়াল,দরজা, জানালার পরতে পরতে রয়েছে মোগল স্থাপত্যের ছোঁয়া। এখানেই চলতো বিভিন্ন অপরাধীর বিচার কার্য। দোষীদের ঝুলানো হত ফাসির কাষ্টে। রয়েছে ফাঁসির মঞ্চ। মহামান্য কাজী বিচার কাজ চালাতেন সোনা রুপা খচিত আলিশান চেয়ারে বসে। বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে তাঁর জমিদারির সালতানাত। বছর জুড়ে থাকতো নানা উৎসব ; রাজ পূণ্যাহ্ !

এটি অষ্টাদশ শতাব্দীতে উত্তর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর কাজীরহাটে বিখ্যাত জমিদার কাজী শাহাবুদ্দিন চৌধুরীর জমিদারির গল্প। এ জমিদার বাড়ীটি কাজী বাড়ী হিসেবে পরিচিত। জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হলেও সেই কাজী বাড়ী এবং বিচারালয়টি দাড়িয়ে আছে কালের স্বাক্ষী হয়ে।

কাজীরহাট বাজার থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্হিত কাজী বাড়ী। কাজী বাড়ীর নামানুসারেই ভূজপুরের কাজীরহাট বাজারটির নামকরন হয়। সাবেক উপ প্রধানমন্ত্রী মরহুম কাজী জাফর আহমদ এই কাজী বাড়ীরই বংশধর ছিলেন।

বর্তমানে বেঁচে থাকা জমিদার পরিবারের ওয়ারিশানদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়,সর্বশেষ কাজী মাহবুবুল আলম চৌধুরী ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত জমিদারি করেন।এর আগে তাঁদের বংশের ৫ পুরুষ পর্যন্ত জমিদারি করেছিলেন কাজী শাহাবুদ্দিন চৌধুরী ও তার বংশধরেরা

ফটিকছড়ির প্রায় অর্ধশত বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে তাঁদের জমিদারি বিস্তৃত ছিল। বছরে একবার এ বাড়ীতে রাজ পূণ্যাহ হতো। হাজার হাজার লোক জমির খাজনা দিতে আসতো। এখানে ফাঁসির মঞ্চের ব্যাপারে লোকমুখে নানা কথা শুনা গেলেও আদৌ বাড়ীটিতে কোন ফাঁসি কার্যকর হয়েছে কিনা তা নিয়ে শংসয় রয়েছে।

তৎকালিন বৃটিশ সরকার থেকে জমিদার কাজী সাহাবুদ্দিন চৌধুরী একটি সনদ পান। এতে বিচারকার্য চালানো এবং বছরে সর্বোচ্চ সাতজন দোষী ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার অনুমতি ছিল। জমিদার কাজী শাহাবুদ্দিন চৌধুরীর দৌহিত্র কবি কাজী হাসমত আলী চৌধুরীর সময় পর্যন্ত ফাসি কার্যকর করার ক্ষমতা বহাল ছিল বলে জানা যায়।সনদটি উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে কাজী হাসমত আলীর আমলে কুখ্যাত হংশ ডাকাত ওরফে শমসের ডাকাত লুট করে নিয়ে যায় বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

যে বাড়ীটির এতো ইতিহাস-ঐতিহ্য সেই বাড়ীটির বর্তমান অবস্হা একেবারেই নাজুক। নেই কোন রক্ষণাবেক্ষণ। খসে পড়েছে পলেস্তার। ভিতরে ভৌতিক পরিবেশ। ওয়ারিশানরা এই বাড়ীটিকে আলাদা রেখে বাকী জমি বন্টন করে সেখানে বসবাস করছেন। তাঁরা ভবিষ্যত প্রজম্মের নিকট সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে বাড়ীটিকে পত্নতত্ব হিসেবে ঘোষণা করে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।