করোনা মহামারির কারণে ব্যাবসার বেহাল দশা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারছেনা ইউরোপের হোটেল রেস্টুরেন্ট বার গুলো তাই ছোট বড়ো চেইন শপ গুলো ডিসেম্বর মাস থেকে কর্মী ছাটাই করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইউরোপের হোটেল রেস্টুরেন্ট বার গুলোর সংঘঠন ! যে কোনো সময়ে প্রায় ১৬৫০ জন কর্মী ছাটাই হতে পারে বলে জানিয়েছে বৃটিশ কফিহাউজ চেইন কোস্টা কফি। নিজেদের অস্থিত্ব বাচাঁতে এ রকম কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানায় ব্রিটিশ এই চেইন কফিহাউজ।
এ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে কোস্টা কফি। কোম্পানিটি বলছে, বৃটেন/ইউরোপ জুড়ে তাদের যত ব্যবসা রয়েছে সব জায়গা থেকে ‘এসিস্ট্যান্ট স্টোর ম্যানেজার’ পদটি বাতিল করবে তারা। এ খবর দিয়েছে স্কাই নিউজ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির যে প্রভাব ব্যবসায় পড়েছে তা এখনো অব্যাহত রয়েছে কোস্টা কফির ওপরে। ফলে কোম্পানির পক্ষে তার সকল কর্মীর চাকরি নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কোস্টা কফি জানায়, তারা গত মে মাস থেকেই তাদের সকল কফিশপ চালু করে যাচ্ছে। কফি শপগুলোতে করোনার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে তারা। ২৭০০ শপের মধ্যে ২৪০০ এরও বেশ খুলে গেছে।
বাকিগুলোও শীঘ্রই খুলতে যাচ্ছে। খোলার পর ব্যবসা স্বাভাবিক হচ্ছেনা বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। সরকারের ভ্যাট বাতিলের কারণে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন ব্যাবসায়ীরা। কিন্তু এখনো ব্যাপক অনিশ্চয়তা রয়েছে যে, কবে নাগাদ কোভিড-১৯ পূর্ববর্তি অবস্থায় ফিরে যাওয়া যাবে।
আর্থিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাকিনসে সংস্থার দাবি, বৈশ্বিক মহামারিতে বিপদে পড়বেন ইউরোপের কর্মজীবীরা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ব্রিটেনে প্রায় এক-চতুর্থাংশ কর্মীকে হয় ছাঁটাই করা হবে, নয়তো বেতন কাটা হবে। অনেককে বেতন ছাড়া দীর্ঘ ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হবে।
ম্যাকিনসে’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,ইউরোপে বেকারত্বের হার ছয় থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। যে ধরনের কাজে অন্যের বেশি কাছে যাওয়ার দরকার হয় না, সেই সব চাকরিতে ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা কম।
ম্যাকিনসে’র মতে, যাদের চাকরি যাওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি তাদের মধ্যে রয়েছেন দোকানের ক্যাশিয়ার, পাচক, নির্মাণকর্মী, হোটেল,রেস্টুরেন্ট ,বার কর্মী । এই ধরনের কাজে ৮০ শতাংশ লোক যুক্ত। তাদের সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি। তাদের কলেজের ডিগ্রি নেই। ছোটখাটো সংস্থায় কাজ করেন।
ম্যাকিনসে জানিয়েছে, ইউরোপে যদি আর তিন মাসের মধ্যে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে এরপরেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তাহলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলিতে ২০২১ সাল নাগাদ বেকারত্বের হার দাঁড়াবে ১১ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২৪ সালের আগে সেই ধাক্কা সামলে ওঠা যাবে না।
যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, আগামী তিনমাস ৮০ শতাংশ কর্মীর বেতন দেবে সরকার। জার্মানি ও ফ্রান্সও একই পথে হাঁটছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে করোনাভাইরাস রিলিফ প্যাকেজ তৈরি করেছে, তাতে ১১ হাজার কোটি ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য।
দৈনিক অপরাজিত বাংলা