করোনার কারণে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ সবশেষ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, যেমনটি ধারণা করা হয়েছিল তার চেয়েও খারাপ অবস্থায় যাচ্ছে এই ব্লকের অর্থনৈতিক অবস্থা৷
বিশেষ করে ইউরোপের অর্থনৈতিক মন্দায় চরম সংকটে পড়েছেন ওই অঞ্চলে থাকা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগাল, গ্রিসে ক্ষুদ্র ও মাঝারি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে নাভিঃশ্বাস অবস্থা।
অনেক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে করোনা সংক্রমণকালীন ২ মাস ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে ৪ মাস একটানা লোকসান গুণে অনেকে মূলধন হারিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন এবং এ ধারা চলমান।
ব্যবসায়িরা বর্তমানে নিজের জমানো টাকা খরচ করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দোকান ভাড়াসহ সরকারের ট্যাক্সের টাকা ও কর্মচারীর বেতন সহ বাকী পরছে মোটা অংকের টাকা।
মূলতঃ ইউরোপের ব্যবসার ভরা মৌসুম বলতে বুঝায় জুন থেকে সেপ্টেম্বর। এ ভরা মৌসুমে ইউরোপের বিখ্যাত শহরগুলো পর্যটনশূন্য। ক্রেতাবিহীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বড় ধরনের লোকসান গুণেও বর্তমান সময় পর্যন্ত যারা টিকে আছেন, তারা এখন ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছেন।
করোনা মহামারির সংক্রমণে প্রায় কোনোরকম প্রস্তুতি ছাড়াই লকডাউনের কারণে, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন শত শত প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশী ব্যবসায়িরা। আবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠার খোলার পরও বিক্রি কমে গেছে শতকরা প্রায় ৮০ শতাংশ।
হাজার হাজার চাকুরীজীবিরা চাকুরি হারাচ্ছেন। সরকার বহুভাবে চেষ্টা করেও সচল করতে পারছে না অর্থনীতির স্বচ্ছল চাকা। বড় বড় প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন না থাকায় বন্ধ রয়েছে উৎপাদনের মেশিন। সপিং মল, কফি সপ, রেস্টুরেন্টে নেই কোন উপচে পরা কোলাহল। রাস্তা ঘাটের ট্রাফিক জ্যাম যেন রুপকথার মতো হয়ে গেছে। অর্থনীতির পরাশক্তি ইউরোপ যেনো বার্ধক্যের শ্বাস কষ্টে ধুঁকছে।
মন্দা ঠেকাতে ফ্রান্স ও জার্মান ঘোষনা করেছে ৫০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ। প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি বসবাসকারী ফ্রান্সে বাংলাদেশিদের মূল ব্যবসা মোবাইল ও মোবাইল অ্যাকসেসরি, আলিমেন্টারি, ফলের দোকান ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসা।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যেই ফরাসি সরকার ঘোষণা করেছে যে, ছোট-বড় কোনো ব্যবসায়ীকেই ফরাসি সরকার হুমকির মুখে পড়তে দেবে না। এখন পর্যন্ত ইউরোপের প্রতিটি দেশের সরকার করোনা মহামারী কালীন কাটিয়ে উঠার জন্য চেষ্টার ত্রুটি করছে না। সেই চেষ্টায় সুন্দর কোন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন ক্ষতিগ্রস্থরা।