ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৫ অক্টোবর ২০২৩
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রুপপুর পারমানবিক কেন্দ্র ও একজন শেখ হাসিনার উচ্চবিলাসী স্বপ্ন….

অনলাইন ডেস্ক
অক্টোবর ৫, ২০২৩ ১০:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রুপপুরের ইতিহাস বহুত লম্বা, যার সুচনা পাকিস্তান আমলের ১৯৬১ সালে শুরু হয়।
শুরুতে রুপপুর পারমানবিক কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনের টার্গেট ধরা হয়েছিলো ২০০ মেগাওয়াট।
প্রকল্পের জন্য ২৬০ একর এবং আবাসিক স্থাপনার জন্য
৩২ একর জমি অধিগ্রহন শেষে, ১৯৬৯-১৯৭০ সালে
পাকিস্থান সরকার রুপপুর পারমানবিক কেন্দ্র পরিত্যাক্ত ঘোষনা করে।

অত:পর স্বাধীন বাংলাদেশে….

দেশ স্বাধীনের পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সরকার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পারমাণবিক
বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট স্বপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার পরে আবারো থেমে যায় রুপপুর প্রকল্প।

জিয়া এরশাদ দুই সরকারের আমলে রুপপুরের ফাইল
পুনরায় খোলা হলেও ১৯৭৭-১৯৮৬ সালে
মেসার্স সোফরাটম পরিচালিত ফিজিবিলিটি স্টাডির
মাধ্যমে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন যৌক্তিক বলে বিবেচিত হয়।

৯ বছরের সময়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী
কমিটি (একনেক) পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (১২৫ মেগাওয়াট) নির্মাণ সংক্রান্ত একটি প্রকল্পের
অনুমোদন হয়, কিন্তু বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে যা আর আলোর মুখ দেখেনি।

এরশাদ সরকারের আমলেই দ্বিতীয়বার ১৯৮৭-১৯৮৮ সালে জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডের দুটি কোম্পানি দ্বিতীয়বার ফিজিবিলিটি স্টাডি করে।
ওই স্টাডির মাধ্যমে প্রকল্পের আর্থিক ও কারিগরি যৌক্তিকতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

এ স্টাডিতে ৩০০-৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
যা জেনারেল এরশাদ আমলেই নেয়নি।

১৯৯১-১৯৯৬ খালেদার শাসনামলে আগের করা
ফিজিবিলিটি ষ্টাডির ফাইল ডাষ্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ১৯৯৬-২০০১ আমলের
১৯৯৭-২০০০ সালে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের
তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার
উদ্যোগে ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর
পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
এ সময়ে মানবসম্পদ উন্নয়নসহ কিছু প্রস্তুতিমূলক
কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।
সরকার বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্ল্যান-২০০০ অনুমোদন করে।

২০০১-২০০৬ বিএনপি জামাতি আমলে খালেদা জিয়া
পুনরায় আরেকবার রুপপুরের ফাইল ডাষ্টবিনে ফেলে খাম্বা দিয়ে দেশ ভরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়।

উচ্চাবিলাসী আধুনিক শেখ হাসিনা….

২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে পাবনার ঈশ্বরদীতে
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করার অঙ্গীকার করে।

ক্ষমতায় এসে

২০০৯ সালে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে
অপরিহার্য কার্যাবলি সম্পাদন’ শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রাথমিক
সব কাজ এবং পারমাণবিক অবকাঠামো উন্নয়নের
কার্যক্রম শুরু করে।
একই বছরের ১৩ মে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন
এবং রাশান ফেডারেশনের স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি
করপোরেশনের (রোসাটোম) মধ্যে ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার’ বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।

২০১০ সালের ২১ মে বাংলাদেশ এবং রাশিয়া সরকারের
মধ্যে ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার’
বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়।

২০১০ সালের ১০ নভেম্বর জাতীয় সংসদে রূপপুর
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

২০১১ সালের ৯ থেকে ১৫ নভেম্বর সময়ে বাংলাদেশের
পারমাণবিক অবকাঠামোর সার্বিক অবস্থা মূল্যায়নের
জন্য আইএইএ ইন্টেগ্রেটেড নিউক্লিয়ার ইনফ্রাস্ট্রাকচার
রিভিউ (আইএনআইআর) মিশন পরিচালিত হয়।
এর মধ্যে ২ নভেম্বর বাংলাদেশ এবং রাশিয়া সরকারের
মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত আন্তরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

২০১২ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি অ্যাক্ট-২০১২ পাস করা হয়।

২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
রাশিয়া সফরকালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের
প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পাদনের জন্য স্টেট এক্সপোর্ট
ক্রেডিট চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

২০১৩ সালের ২ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রথম পর্যায় কাজের
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের
অপারেটিং অর্গানাইজেশন প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির
বিধান সংবলিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আইন, ২০১৫ জারি করা হয়।

২০১৬ সালের ১০ থেকে ১৪ মে রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পারমাণবিক অবকাঠামো প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আইএইএ’র সুপারিশ
বাস্তবায়ন অগ্রগতি রিভিউ করার জন্য ফলোআপ মিশন পরিচালনা করা হয়।

২০১৬ সালের ২১ জুন রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাইট লাইসেন্স দেয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

২০১৭ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে
‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্পেন্ট ফুয়েল
রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিতে পারস্পরিক সহায়তা’ সংক্রান্ত
একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক
ইউকিয়া আমানো ২০১৭ সালের ৩ জুলাই রূপপুর
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি এই কেন্দ্র স্থাপনে সব আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।

২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটের প্রথম কংক্রিট
ঢালাই উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর মাধ্যমেই বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পথে পা দিয়েছিলো।

২০২১ সালের ১০ অক্টোবর এবং ২০২২ সালের
১৮ অক্টোবর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের
পারমাণবিক চুল্লিপাত্র বা রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল
স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ
প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’
বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান আসে।

৫ই অক্টোবর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস
ওসমানের কাছে এই ইউরেনিয়াম আনুষ্ঠানিকভাবে
হস্তান্তর করেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা
রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সিই লিখাচেভ।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি।

১ হাজার ৬২ একর জমির ওপর রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

২০২৪ সালের মার্চে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের
প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন
শুরু করার কথা রয়েছে।
আর দ্বিতীয় ইউনিটেও ২০২৫ সালের মাঝামাঝি আরো
১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

একজন উচ্চাবিলাসী শেখ হাসিনা এভাবেই ৩০০ একরের ২০০ মেগাওয়াটের প্রকল্প কে ১৬০০ একরে ২৪০০ মেগাওয়াটে নিয়ে আগামী কয়েক প্রজন্মের জন্য টেকসই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে দিয়েছেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।