ঋণের ভারে সোজা হয়ে দাঁড়াতেই পারছে না চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। স্বপ্নের শহর গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে মেয়র হওয়ার পর প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা দেনা রেখে গেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের(চসিক) সাবেক মেয়র আ জ ম নাসির দেনার এই হিসাব জানিয়েছেন চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
সিটি কর্পোরেশনের এর আগে ১৯৯৪ সালের ১১ মার্চ থেকে ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সময়ে ৬০ কোটি টাকা দেনা রেখে যান। ২০১০ সালের ২০ জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ২৭ মে পর্যন্ত বিএনপি সমর্থিত মেয়র এম মনজুর আলম ২৯৫ কোটি ২৬ লাখ ৯৩ হাজার ১৭৪ টাকা দেনা রেখে মেয়র পদ ছেড়েছেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আয়বর্ধক প্রকল্পগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যাওয়া, নতুন কোনো আয়বর্ধক প্রকল্প চালু না করা, অনিয়ম, দুর্নীতিসহ নানা কারণে দেনা বেড়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
তিনি বলেছেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাকালে দূর্যোগ মুহুর্তে আমাকে সিটি কর্পোরেশনের দ্বায়িত্ব দিয়েছেন। আমি এসে দেখি শুধু দেনা আর দেনার হিসাব। দেনার হিসাব করতে করতে আমাদের করপোরেশনকে শুন্য করে দিয়েছে।
মেয়র হিসেবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের দিন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট দিয়ে গেলেন আ জ ম নাছির উদ্দীন, তার প্রস্তাবিত আড়াই হাজার কোটি টাকার বাজেটে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হবে দেনা শোধে ,তিনি প্রশ্ন রাখেন তাহলে আর থাকবে কি ।
বুধবার(১৯ আগস্ট) বিকালে নগরভবনের সম্মেলন কক্ষে চসিক স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রশাসক সুজন এসব কথা বলেন।
তিনি সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রশংসিত কাজ গুলো ধংস করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী নগরীতে শতভাগ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে ভতুর্কি দিয়ে চসিকের আওতায় স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম চালু করেছিলেন। প্রসুতিদের জন্য তিনি বিভিন্ন জায়গায় হাসপাতাল গড়ে তুলে ছিলেন। তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমার যতটুকু আছে তা উজাড় করে চসিকের স্বাস্থ্য সেবার সুনাম ফিরিয়ে আনবো।
তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসক ও সংশ্লিস্ট সকলকে আন্তরিকতার সাথে নাগরিক সেবা নিশ্চিতের পরামর্শ দেন।
সুজন মেমন হাসপাতাল সর্ম্পকে বলেন কি মেমন কি হয়ে গেল। রাতে যদি কোন রোগী আসে যারা ফ্রন্ট ডেস্কে থাকেন তারা সিট খালি নাই বলে সামনের ইমপালস হাসপাতাল দেখিয়ে দেয়।
তিনি আরো বলেন, আমাদের যা কিছু আছে তা ঠিকমত ব্যবহার করতে হবে। না হয় চাঁটগাঁইয়া ভাষায় ‘পোষ্যিন’ দেয় সেরকম প্রতিষ্ঠান গুলোকে অন্য কাউকে দিয়ে দিতে হবে। তবু আমার বাচ্চাটা বেঁচে থাক।
এসময় প্রশাসক কাজে গাফিলতি পরিলক্ষিত হলে কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়ে বলেন, চসিক একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। নগরবাসীর সেবা নিশ্চিত করার এই প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য। তাই ভর্তুকি দিয়ে হলেও নগরবাসীর সেবা অব্যহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র টাকার জন্য যারা এ চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত হন তারা অমানুষ বলে গণ্য হবেন। ডাক্তারদের উপলব্দি করা উচিত যে মানুষ পথ সৃষ্টি করে পথ কিন্তু মানুষ সৃষ্টি করতে পারেনা।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার সেলিম আকতার চৌধুরী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী, ইনচার্জ ডা. নাসিম ভুঁইয়া, ডা. আশিষ মুখার্জি, ডা.ইশরাত জাহান, ডা. তৌহিদুল আনোয়ার খান, জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ ইমাম হোসেন রানা, ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, ডা. তপন কুমার চক্রবর্তী, ডা. হাসান মুরাদ চৌধুরী প্রমূখ।
দৈনিক অপরাজিত বাংলা ।