যেন থামছেইনা পুলিশের নৃশংসতা। দেশে আলোচিত মেজর (অঃ) সিনহা হত্যায় বাকরুদ্ধ পুরো দেশ। তার রেশ শেষ হতে না হতেই আবার চকরিয়া পুলিশ ওসির বিরুদ্ধে মামলা হলো টাকা না পেয়ে এক প্রবাসীকে ক্রসফায়ারে হত্যা করার।
এবার ৫০ লক্ষ টাকা না পেয়ে চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে তুলে নিয়ে ক্রসফায়ারে এক প্রবাসীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ওসিসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় নিহতের মামা ও বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আহমদ নবী বাদী হয়ে পটিয়ায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে গতকাল রবিবার মামলা করেন ।
বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে চট্টগ্রামের সিআইডি পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে, দোষীদের শাস্তির দাবি জানান স্বজনসহ এলাকাবাসী।
মামলার প্রধান আসামি চকরিয়া উপজেলার হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম ও চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের কথামৌজা গ্রামের মো. আবদুল আজিজের ছেলে মো. জাফর দীর্ঘদিন ওমানে ছিলেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরুর আগে ওমান থেকে তিনি দেশে ফিরেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে আর বিদেশে যেতে পারেননি। গত ২৯ জুলাই রাতে তাকে বাড়ি থেকে সাদা পোশাকধারী কয়েকজন ব্যক্তি তুলে নিয়ে যান। পরবর্তীতে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে প্রবাসীর কাছ থেকে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু প্রবাসীর পরিবার ওই টাকা দিতে পারেননি। এর দুই দিন পর প্রবাসীর পরিবারের কাছে চকরিয়া থানা পুলিশ ফোন করে লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য খবর দেয়।
এ প্রসঙ্গে বাদীর আইনজীবী নূর মিয়া বলেন, ‘ঘটনাটি অমানবিক। পরিবারের সদস্যরা ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় আদালতে এসেছেন।’
এর আগে গত ৩১ জুলাই পটিয়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সিএনজি চালক মো. হাসানকে চকরিয়া থানা পুলিশ তুলে নিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যা করে বলে অভিযোগ ওঠে। হাসান পৌরসভার পাইকপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে বলে পৌর কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে কোনো মামলা করেনি তার পরিবার।
মামলা হওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জাফরের কাছে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা পাওয়া যায়। তাকে নিয়ে আরো মাদক উদ্ধারে অভিযান চালানোর সময় এই ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে।’
মামলার বাদী আহমদ নবী বলেন, তারা ৫০ লাখ টাকা দাবি করলে আমার বোন বলেছে, আমি এত টাকা কোথায় পাব।
আইনজীবী নুর মিয়া বলেন, আমরা দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। এই দুজনসহ ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
গত ৬ বছর ধরে ওমান থাকা প্রবাসী নিহত জাফর গত মার্চে বাংলাদেশে আসেন।
টাকার লোভে হায়েনা হয়ে উঠছে কথিত জনগনের সেবক নামে পরিচিত কিছু পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। সাধারন মানুষ এখ জিম্মি হয়ে গেছে ক্রসফায়ার নামক এক নীরিহ মানুষ হত্যার দানবের কাছে।