কিউবায় রাষ্ট্রীয় পদক ‘কার্লোস জে. ফিনলে অর্ডার’ পেয়েছেন বাংলাদেশের দুই চিকিৎসা বিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল ও ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর।
সম্প্রতি কিউবার ভারাদেরো শহরে আয়োজিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে দেশটির রাষ্ট্রপতির পক্ষে এই দুই চিকিৎসা বিজ্ঞানীর হাতে হাতে পদক তুলে দেন বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী এডওয়ার্ডো মার্টিনেজ ডায়েজ।
অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর জাপানের ঔতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেন্টার ফর গ্লোবাল অ্যান্ড লোকাল ইনফেকশাস ডিজিজেজ-এর ভিজিটিং রিসার্চার।
পদক পেয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় ডা. স্বপ্নীল বলেন, চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি এ পেশা নিয়ে গবেষণা করা এবং নিজের গবেষক সত্তা বজায় রাখা এ দেশে খুবই চ্যালেন্জিং। কিউবার সরকারের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। কেননা এ ধরনের স্বীকৃতি সমস্ত কষ্টকে ভুলিয়ে দেয় এবং নিজের প্রতি আস্থা তৈরি করার পাশাপাশি গবেষণার প্রতি দায়বদ্ধতা তৈরি করে।
এর আগে ‘ন্যাসভ্যাক’ নামক হেপাটাইটিস বি’র একটি নতুন ওষুধ উদ্ভাবনের জন্য কিউবান অ্যাকাডেমি অব সাইন্সেস ২০১৯ সালে অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল ও ডা. আকবরকে কিউবান ও জাপানী কো-রিসার্চারদের সাথে একাডেমি অব সাইন্সেসের সর্বোচ্চ পদক ‘প্রিমিও ন্যাশনাল’ প্রদান করে। এছাড়াও অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল ২০২১-এ বাংলাদেশ অ্যাকাডেমি অব সাইন্সেসর সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘বাস গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড-এ ভূষিত হন।
‘ন্যাসভ্যাক’ ছাড়াও অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল ফ্যাটি লিভার, লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যন্সার চিকিৎসায় স্টেম সেল এবং হার্বাল মেডিসিন নিয়ে গবেষণা করছেন।
কার্লোস জে. ফিনলে ছিলেন কিউবান মহামারীবিদ যিনি আবিষ্কার করেছিলেন ‘হলুদ জ্বর একটি মশা দ্বারা সংক্রামিত থেকে সুস্থ মানুষের মধ্যে প্রেরণ করা হয়’ । যদিও তার এই ধারণা ২০ বছর ধরে উপেক্ষিত ছিল। কার্লোস জে. ফিনলের মৃত্যুর পর কিউবান সরকার তার সম্মানে ফিনলে ইনস্টিটিউট ফর ইনভেস্টিগেশন ইন ট্রপিক্যাল মেডিসিন তৈরি করে এবং তার নামে এই রাষ্ট্রীয় পদক চালু করে।
বিজ্ঞানে অবদান রাখার জন্য কিউবার সরকার প্রতি বছর দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানীদের এ পদকে সম্মানিত করে। এর আগে এই পদক পেয়েছিলেন মার্কিন বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জর্জ পি. স্মিথ যিনি ২০১৮ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।
