ফিটনেস বিহীন অন্তত ২৪টি গাড়ি বিকল হয়ে যাওয়া এবং গাড়ির অতিরিক্ত চাপে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপ্রান্ত থেকে টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার সড়কে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রী সাধারণের।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে জানা যায়, সোমবার রাত ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু ও সেতু এলাকায় দু’টি দ্বিতল গাড়ি, চারটি লক্কর-ঝক্কর ঢাকা সিটিতে চলা স্বল্পপাল্লার গাড়ি, ট্রাক, ও ব্যক্তিগত যানবাহনসহ মোট ২৪টি গাড়ি বিকল হওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১০ টার পর সেতু ও সেতু এলাকায় এ গাড়ি বিকল হয়। পরে বিকল গাড়িগুলো তাৎক্ষণিক অপসারণ করা হলেও অতিরিক্ত গাড়ির চাপ সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, সেতু পূর্বপ্রান্তে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ তৈরি হওয়ায় সকাল ৮টার পর থেকে সেতুর সিরাজগঞ্জ প্রান্তে থেকে ঢাকামুখী লেন বন্ধ করে উত্তরমুখী করা হয়। কিন্তু এতেও সেতু অতিরিক্ত গাড়ি ধারণ করতে পারছে না। ফলে গাড়ির সারি টোল বুথের সামনে মাঝে মাঝে আটকে থাকছে।
সেতু কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, স্বাভাবিক সময়ে তারা প্রতি মিনিটে ১৫ থেকে ২০টি গাড়ি পারাপার করে থাকেন। কিন্তু এই রকম পরিস্থিতিতে ৪০ থেকে ৪৫টি গাড়ি পারাপার করা হয়ে থাকে। এর অতিরিক্ত গাড়ি পারাপার করলে সেতু তা ধারণ করতে পারে না।
অপরদিকে সিরাজগঞ্জ প্রান্ত থেকে ঢাকামুখী লেন বন্ধ করে দেয়ায় ঢাকামুখী লেনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বেলা বাড়ার সাথে এ পরিস্থিতি আরও নাজুক অবস্থার দিকে যাচ্ছে বলে জানানো হয়।
যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, স্বস্তির ঈদ যাত্রার যে স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ দেখিয়েছিল তা ভেস্তে গেছে। মহাসড়কের এই অংশই তাদের পাড়ি দিতে সময় লাগছে পূর্বের ন্যায় ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা। পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। তাদের আরও অভিযোগ বাস মালিক সমিতর ফিটনেস বিহীন বাহন মহাসড়কে না নামানোর যে প্রতিশ্রুতি ছিল তা তারা ভঙ্গ করেছে সেই সাথে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে মহাসড়কে ফিটনেস বিহীন গাড়ি চলায় এ ভোগান্তির সৃষ্টি।
টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, যানজট নিরসনে পুলিশের সাত শতাধিক সদস্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে গেল ২৪ ঘণ্টায় গাড়ি পারাপার হয়েছে ৪৩ হাজার ৪০০টি। আর এতে টোল আদায় হয়েছে তিন কোটি তিন লাখ টাকা।
এদিকে সোমবার ১০টার পর সেতু ও সেতু এলাকায় যানবাহন বিকল হওয়ায় রাত ১২টা হতে সকাল ৫টা পর্যন্ত সাত ঘণ্টায় মাত্র পারাপার হয়েছে ৯ হাজার গাড়ি। যার বিপরতীতে মোট আদায় মাত্র ৭২ লাখ টাকা।
তবে আর সকাল ৮টা থেকে সোয়া ১০টা পর্যন্ত চারলেনে উত্তরের যাত্রায় একমুখী লেনে যানবাহন চালানোয় যানবাহন পারাপারের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে ৫ হাজার ৪০০ গাড়ি উত্তরে দিকে পারাপার করা হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩৬ লাখ টাকা।