প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বহু প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল সার্ভিসের দ্বিতীয় ধাপের উদ্বোধন করেছেন।
শনিবার দুপুর দুইটা ৩৫ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশন থেকে আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় সবুজ পতাকা উড়িয়ে তিনি উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এর আগে দুপুর আড়াইটায় আগারগাঁও স্টেশনের উদ্বোধনস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রথমে ট্রেনের স্বয়ংক্রিয় টিকিট (অস্থায়ী পাস কার্ড) নেন। এরপর কার্ড পাঞ্চ করে প্রধানমন্ত্রী ট্রেনের লাউঞ্জে প্রবেশ করেন। সেখানে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ট্রেন চলাচলের সংকেত পতাকা নেড়ে ট্রেন চলার সংকেত দেন তিনি।
উদ্বোধন ঘোষণার পর মতিঝিল স্টেশনে এমআরটি লাইন-৫ এর নর্দান রুটের কাজের উদ্বোধনের জন্য মেট্রোরেলে চড়ে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী। মেট্রোর ২০ কিলোমিটারের এই লাইন যাবে হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা হয়ে গাবতলী, মিরপুর-১০, গুলশান পর্যন্ত। ৪১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৮ সালে।
রোববার থেকে মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
প্রথমে তিনটি স্টেশন চালুর মাধ্যমে এ অংশের মেট্রোরেল চলাচল শুরু হবে। স্টেশনগুলো হলো- মতিঝিল, বাংলাদেশ সচিবালয় ও ফার্মগেট।
আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নগরবাসী ২০.১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারবেন মাত্র ৩৮ মিনিটে। এতে বাঁচবে ওই পথ ব্যবহারকারী মানুষের কর্মঘণ্টা, অর্থনীতির চাকা ঘুরবে আরও দ্রুত।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৫ নভেম্বর থেকে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলাচল করা ট্রেনগুলো উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উভয় দিকে চলাচল করবে। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পরবর্তী ট্রেনগুলো শুধু উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচল করবে। এ সময় মতিঝিল পর্যন্ত কোনো ট্রেন আর চলাচল করবে না।
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রতিদিন মেট্রোতে গড়ে ৮৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছেন। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরোদমে চালু হলে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবেন।
তার ফলে প্রতিদিন ৬ লাখের বেশি যাত্রী চলাচল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মেট্রোরেলের কর্মকর্তারা।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথের জন্য ভাড়া গুনতে হবে ১০০ টাকা।
ঢাকার প্রথম এ মেট্রোরেলের রুট বিস্তৃত উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে কমলাপুর পর্যন্ত। গেলো বছরের ২৮ ডিসেম্বর এই রুটের উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরদিন থেকেই শুরু হয় যাত্রী চলাচল। যার মধ্য দিয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। এই বাহনকে ঘিরে নাগরিকদের মধ্যে তৈরি হয় উৎসাহ উদ্দীপনা। প্রথম দিন থেকেই জনপ্রিয় বাহনে পরিণত হয় মেট্রোরেল।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আশা করছি আগামী বছর কমলাপুর পর্যন্ত স্টেশন চালু হবে।
ডিপো থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেলের মোট স্টেশন থাকছে ১৭টি। স্টেশনগুলো হলো- উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মতিঝিল ও কমলাপুর।