২১ আগস্ট, রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞের নজিরবিহীন ভয়াল দিন আজ।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন,
একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষ হতে পারে চলতি বছরই।
এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিচারিক আদালতে সাজাপ্রাপ্তদের রায় যাতে বহাল থাকে, তার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানোর কথাও জানান তিনি।
গেল বছরের শেষের দিকে মামলাটির শুনানি শুরু হলেও বিচারপতির অসুস্থতার কারণে বর্তমানে তা মুলতবি রয়েছে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে, ২০০৪ সালের ২১
আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড
হামলায় দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভী রহমানসহ নিহত হন ২৪ জন।
হরকাতুল জিহাদের এই হামলায় আহত হন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সে-সময় সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাসহ কয়েকশ নেতা-কর্মী।
এ এম আমিন উদ্দিন আরও জানান, হামলার ১৪ বছর পর, ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর আসে হত্যা ও বিস্ফোরক
আইনের দুই মামলার রায়।
এতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯
জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
নানা মেয়াদে সাজা হয় আরও ১১ জনের।
‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাতেই একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা’‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাতেই একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা’
এর পর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন ও আপিল শুনানির জন্য নথি আসে হাইকোর্টে।
গতবছরই শুনানি শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি পেপারবুক পড়া।
তবে, এ বছরই শুনানি শেষে চূড়ান্ত রায় হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানসহ এ মামলার ১৬ আসামি এখনও পলাতক।
তাদের আইনের আওতায় আনার জোর প্রচেষ্টা চলছে, জানালেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
গ্রেনেড হামলা মামলার বাদী ও আহত বদর আজিজ উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে ১২
আগস্ট হাওয়া ভবনে পরিকল্পনা হয়েছিল।
সেখানে সভাপতিত্ব করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া।
যেভাবে প্রাণে বাঁচলেন শেখ হাসিনাযেভাবে প্রাণে বাঁচলেন শেখ হাসিনা
আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, হামলার মূল লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
মানব ঢাল তৈরি করে তাকে রক্ষা করেন নেতাকর্মীরা। তবে নিহত হন নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন।
মারাত্মক আহত হয় অন্তত পাঁচশো জন।
গ্রেনেডে হামলার পর শেখ হাসিনার গাড়ি লক্ষ্য করেও ১২ রাউন্ড গুলি করে ঘাতকেরা।
সংসদ সদস্য ও গ্রেনেড হামলায় আহত পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, তৎকালীন ক্ষমতাসীনরা তখন আমাদের ওপর, আমাদের উদ্ধারকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করে।
এই সুযোগে খুনিদের পালিয়ে যাওয়ার পথ করে দেওয়া, এটি করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।
প্রকাশ্য হামলায় এমন হত্যাযজ্ঞে স্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা দেশ। পরে শেখ হাসিনাও অভিযোগ করেন, তাকে হত্যার চেষ্টা হয় অনেক আগে থেকেই।
শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, লক্ষ্যটা ছিল আমি এবং আমরা ট্রাকে ছিলাম তাঁদের হত্যা করার।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধী রাজনৈতিক দলকে
নেতৃত্বশূন্য করার এমন অপচেষ্টা খুবই ঘৃণ্য কাজ এবং কোনোভাবেই তা কাম্য নয়।