মানবাধিকার কমিশন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারলে মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও উন্নতি হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিদায়ী চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে কমিশনের তিন বছর মেয়াদ পূর্তিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে নাছিমা বলেন, কমিশনকে আরও শক্তিশালী করা হোক। কমিশন যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে নিজে স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত করতে পারে, সে ক্ষেত্রে মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে। এর জন্য পৃথক কোনো কমিশন গঠনের প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, জোরপূর্বক গুম ও নিখোঁজদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে, তা সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত।
কমিশনের বিদায়ী চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমলা হওয়া যে এত অপরাধ জানতাম না, আমলারা যে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে না, আমলা হলে আর কিছু করতে পারে না, মানুষের জনসেবা করতে পারবে না, এটা বুঝতে পারছি না।’
২০১২ থেকে এখন পর্যন্ত ১১৯টি গুমের অভিযোগ এসেছে জানিয়ে নাছিমা বলেন, এর মধ্যে নিখোঁজ বা গুম থেকে ফেরত এসেছেন ২৮ জন। ৩৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। ৬২টি অভিযোগ সরাসরি দাখিল হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন থেকে ৪৮টি অভিযোগ এসেছে। আর নিজেরা স্বপ্রণোদিত হয়ে ৯টি অভিযোগ নিয়েছেন।
আইনের সীমাবদ্ধতা, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতিবেদন না পাওয়াকে নিজেদের কাজের বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপির চলমান আন্দোলন ও পুলিশের হামলা এবং বিএনপির নেতাদেরই মামলায় আসামি করার বিষয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে নাছিমা বলেন, ‘যদি ভুক্তভোগীদের মামলা আদালত না নেয়, তাহলে লঙ্ঘন হবে। আপনার বিচার চাওয়া ও পাওয়ার অধিকার আছে। আদালত তো মামলা নিয়েছে।’
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলার বিষয়ে নাছিমা বলেন, দুই পক্ষ দুই রকম বক্তব্য দিচ্ছে। আমরা প্রতিবেদন চেয়েছি। পাওয়ার পরে সিদ্ধান্ত দেব।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কামাল উদ্দিনসহ আরও তিন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।