রাজধানীর নয়াপল্টনে পূর্ব ঘোষিত সমাবেশ থেকে রোববার (২৯ অক্টোবর) সারাদেশে হরতাল পালনের ঘোষণা দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। হরতাল ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের তাণ্ডব। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, পুলিশ হাসপাতালে হামলাও চালায় তারা। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা রাজধানীতে এসব হামলা-ভাঙচুর চালায়।
ফকিরাপুল চার রাস্তার মোড়ে তাদের হামলা ও মারধরে মারা যায় পুলিশ সদস্য মো. পারভেজ। বিএনপি-জামায়াতের হামলা থেকে রক্ষা পায়নি সাধারণ মানুষ, গণমাধ্যমকর্মী, হাসপাতালও। ইত্তেফাক, কালবেলা, ঢাকা টাইমস, সময় টেলিভিশন, যমুনা টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের মারধর ও তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা।হরতাল ঘোষণার পরপরই কাকরাইল মোড় ও হাইকোর্টের সামনে পুলিশ ও সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তাদের হামলায় দুজন পথচারী আহত হয়েছেন। আহত পথচারীরা হলেন হলেন: নাসির (৩৫) ও সুজন (৩০)।
দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দিয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। কালভার্ট মোড়, পুরানা পল্টন ও সেগুন বাগিচা—এই তিন দিক থেকে ঘেরাও করে পুলিশকে আক্রমণ করেছে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাদের হামলায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য গুরুতর আহত হয়। পরে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনার পরপরই রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আগুন ধরিয়ে দেয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেল এ হামলার তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, বিএনপির হামলায় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ২২ জন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ১৯ জন আহত পুলিশ সদস্য চিকিৎসাধীন রয়েছে।
রাজধানীর আরামবাগেও পুলিশের ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে। আরামবাগে জামায়াতের সমাবেশের শেষ পর্যায়ে হঠাৎ কয়েকজন কর্মী পুলিশকে লক্ষ্য করে অতর্কিতে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে। পরে পুলিশও লাঠিচার্জ করে। এতে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয় দলটির নেতাকর্মীরা। এছাড়া রাস্তার পাশের ভবনের ছাদ থেকে ঢিল ছুঁড়তে থাকে পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে। তাদের হামলায় পুলিশের অনেক সদস্য আহত হয়েছেন।
রাজধানীর ফকিরাপুল চার রাস্তার মোড়েও বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হয়েছে পুলিশ সদস্যরা। এসময় তাদের হামলা ও মারধরের শিকার হয়ে মো. পারভেজ নামে পুলিশের এক কনস্টেবল নিহত হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের হামলার পর বিকেল ৪টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সোয়া ৪টায় মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর সন্ধ্যার দিকে আবারও মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনে পুলিশের ওপর হামলা চালায় জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এ সময় একটি মোটরসাইকেল ও গাড়িতে আগুন দেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
