রাষ্ট্রদ্রোহ ও ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের মামলায় সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের আট সপ্তাহের জন্য জামিন স্থগিত করেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। পরে তিনি জানান, চেম্বার জজ আদালত আজ তার জামিন শুনানি নিয়ে আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন। ফলে তিনি এ মামলায় মুক্তি পাচ্ছেন না। এর আগে বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি মো. আকরাম হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ সংগ্রাম সম্পাদককে এক বছরের জন্য জামিন দেন। সেইসঙ্গে তাকে কেন স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।হাইকোর্টে আবুল আসাদের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও মোহাম্মদ শিশির মনির। সঙ্গে ছিলেন মো. আসাদ উদ্দিন।মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে শহীদ উপাধি দিয়ে সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে দণ্ডবিধির রাষ্ট্রদ্রোহ ও ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করেন এক মুক্তিযোদ্ধা। সে মামলায় ১৩ ডিসেম্বর আবুল আসাদকে তার অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাবন্দি।
দৈনিক সংগ্রামের প্রবীণ সম্পাদক আবুল আসাদের জামিন স্থগিত হওয়ায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বিবৃতি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, আবুল আসাদ প্রায় সাড়ে ৯ মাস যাবত কারাগারে বন্দি জীবন-যাপন করছেন। তিনি একজন প্রবীণ সাংবাদিক। দেশের প্রাচীণ একটি পত্রিকার সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। দেশের উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিন প্রাপ্ত হন। মামলায় জামিন পাওয়া অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনী অধিকার। তিনি আইনী প্রক্রিয়ায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর কারাগার থেকে বের হওয়ার সকল প্রস্তুতি যখন চূড়ান্ত, তখন সরকার তাকে মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার জামিন স্থগিত হয়ে যায়। সরকারের এ ভূমিকায় আমরা বিস্মিত ও হতবাক।
তিনি বলেন, আবুল আসাদ সাহিত্য ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখে চলেছেন। তার মত একজন বয়োবৃদ্ধ সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীকে অন্যায়ভাবে আটক রেখে সরকার তার উপর জুলুম করছে। সরকারের এ ভূমিকায় সংবাদপত্র ও সাংবাদিক দলনের চরিত্র ফুটে উঠেছে।
তিনি অবিলম্বে আবুল আসাদকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান