দেশে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে দুর্বিসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। এদের সংঘবদ্ধ ভয়ংকর কর্মকান্ডে সমাজের সর্বস্তর একপ্রকার জিম্মি হয়ে গেছে এসব কিশোর গ্যাংয়ের কাছে। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও কিশোর গ্যাংয়ের বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই আছে। এসব সংঘর্ষ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিনত হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ৯ অক্টোবর শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ঘটে গেছে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নাইম নামে এক কিশোর ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৩ কিশোর। নিহত নাইম ইসদাইর এলাকার মৃত খলিল মিয়ার ছেলে।
এলাকাবাসী জানায়, বড় ভাই, ছোট ভাই দ্বন্দ্ব ও মাদক বেচাকেনা নিয়ে বিরোধের জের ধরে নাইমকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে হৃদয় নামে আরেক কিশোর।
এ ঘটনায় সে দিন রাতেইর ফতুল্লার ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকায় হৃদয় ও হাবিব নামে দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হৃদয় একই এলাকার রজব কানার ছেলে। তাদের উভয়ের বয়স ১৫-১৭ এর মধ্যে।
ভুক্তভুগী প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, “দীর্ঘদিন যাবত ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত চলছে। প্রায়ই কিশোরদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, প্রকাশ্যে ধারালো ছুরি, রাম দা নিয়ে মহড়া নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসী এ বিষয়ে পুলিশকে জানালে তারা এসে টহল দিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারতো না।”
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, হৃদয় ও হাবিব নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহরের জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষে আল আমিন, লিমনসহ তিনজন ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছে। সংঘর্ষের কারণ জানতে এবং জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রাজনৈতিক নেতা জানান, “এদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে এলাকার বিভিন্ন বড় ভাইরা, এসব বড় ভাইরা রাজনৈতিক প্রভাবে শক্তিশালী। তাদের অনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য কিশোর শ্রেণীদের ব্যবহার করা হয়। তুলে দেয় হয় তাদের হতে মরনাস্ত্র। বিশেষ করে এলাকার আধিপত্য, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করতে কিশোর গ্যাং প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। এদের হাতে পুরা এলাকাবাসী জিম্মি।”