রূপচাঁদার নামে রাজধানীর বাজারে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ পিরানহা। পোয়া মাছে মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকর কেমিকেল। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মাছের আড়তে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে এ অভিযান শুরু হয়।
সারওয়ার আলম জানান, মাছ দীর্ঘ সময় ধরে তাজা রাখতে বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে বলে গোপন তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া মাছের শরীরে বিভিন্ন রং ব্যবহার করারও অভিযোগ আছে ।,কারওয়ান বাজারে সামুদ্রিক রূপচাঁদা মাছ বলে নিষিদ্ধ পিরানহা বিক্রি, অস্ট্রেলিয়ান মাগুর বিক্রিসহ ক্ষতিকর রং দিয়ে মাছ বিক্রির অভিযোগে ৫ জন মাছ বিক্রেতাকে ১ থেকে ৩ মাস মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অভিযান চলমান আছে।
শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এমন চিত্র উঠে আসে।
পিরানহা মাছ দেখতে অনেকটা রূপচাঁদা মাছের মত। সারা বিশ্বে এই মাছটি হিংস্র, রাক্ষুসে এবং মানুষখেকো মাছ হিসেবে পরিচিত। তাই, সরকার পিরানহা মাছকে ২০০৮ সালে চাষ ও বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তারপরও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় ময়মনসিংহ, গাজীপুর, ভোলাসহ কয়েকটি জেলায় অবৈধভাবে এই মাছ চাষ করে আসছে। এবং ওইসব জেলায় স্থানীয়ভাবে বিক্রির পাশাপাশি রাজধানীতেও নিষিদ্ধ এই মাছ বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এই পরিস্থিতিতে মৎস্য অধিদপ্তরের সহায়তায় র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কাওরান বাজারের মাছের আড়তে অভিযান চালিয়ে বিপুল সংখ্যক নিষিদ্ধ পিরানহা ও আফ্রিকান মাগুর মাছ জব্দ করে।
এই পিরানহা মাছ কোথা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে একজন মৎস্য ব্যবসায়ী বলেন, ‘ভালুকা বাজার থেকে কিনছিলাম ৫০-৬০ কেজি। এটা যে ক্ষতিকারক জানলে আমি কখনো কিনতাম না।’
এদিকে, র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, ‘এর আগেও এই বাজারে অভিযান করে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছিলো। তারপরেও এই লোকজন এগুলো করে যাচ্ছে। এই পিরানহা মাছ বাজারে, বিশেষ করে হোটেলে রূপচাঁদা মাছ বলে বিক্রি হয়, এমনকি বাজারেও বিক্রি করা হয়। এটি এমনি মাছ যে অন্যান্য মাছকে খেয়ে ফেলে এমনকি এটি মানুষকে পর্যন্ত কামড়ায় এবং ক্ষতিকর। সে কারণে এটি চাষ, পরিবহন এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ।’
এই মাছ বিক্রি মৎস্য আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ বলেও জানান ঢাকা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
ঢাকা জেলার মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিস অ্যাক্টে মৎস্য সংরক্ষণ এবং সুরক্ষায় এই আইনে চাষ করা, পরিবহন করা, বিক্রি করা, মজুদে রাখা সম্পূর্ণ বেআইনি।’
এছাড়া, ক্রেতা আকৃষ্ট করতে মাছে ক্ষতিকর জেলি ও রং মিশিয়ে মাছ বিক্রির অভিযোগেও জরিমানা করা হয় কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়ীকে।