আলোচিত লোমহর্ষক যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ১৮ কিশোরের উপর পৈশাচিক নির্যাতনে মৃত্যু হয় ৩ কিশোরের। শিশু কেন্দ্রের পাঁচ কর্মকর্তার নেতৃত্বে ওই কিশোরদের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়। এর মধ্যেই অভিযুক্ত ওই পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আহত হয় বাকী ১৫ কিশোর।
গতকাল ১৫ আগস্ট, শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন এসব পৈশাচিক ঘটনার তথ্য গনমাধ্যকে জানান।
গ্রেফতারকৃত ৫ কর্মকর্তার অনুগত সাত-আট কিশোর বন্দিও অংশ নিয়েছিল নির্মম এ ঘটনায়। ‘চুল কাটা নিয়ে বিরোধের সূত্র ধরে’ মিটিং করে ওই নির্যাতন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ~যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক ও সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ,
~সহকারী তত্ত্বাবধায়ক প্রবেশন অফিসার মাসুম বিল্লাহ,
~কারিগরি প্রশিক্ষক ওমর ফারুক, ~ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর একেএম শাহানুর আলম ও
~সাইকো সোশ্যাল কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমান।
১৪ আগস্ট, শুক্রবার ওই কেন্দ্রের ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হেফাজতে নেয়ার পর মামলা হয়। এরপর ওই রাতে এই পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ঘটনার নেপথ্যে জানা যায় এ পৈশাচিক ঘটনার সূত্রপাত খুব সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, গত ৩ আগস্ট ঘটনার সূত্রপাত। কিশোর বন্দি হৃদয় চুল কাটায় পারদর্শী। ঘটনার দিন হৃদয়কে চুল কেটে দিতে বলেন কেন্দ্রের নিরাপত্তাপ্রধান নূর ইসলাম। কিন্তু ঈদের আগে প্রায় দুশ বন্দির চুল কাটায় তার হাত ব্যথা উল্লেখ করে চুল কাটতে অপরাগতা জানায় হৃদয়।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নূর ইসলাম এবং কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহর কাছে অভিযোগ করেন, ‘ওরা ট্যাবলেট খেয়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে রয়েছে।’
পুলিশ সুপার আরো জানান, এ সময় সেখানে উপস্থিত কিশোর নাঈদ অভিযোগ শুনে বিষয়টি পাভেলকে জানিয়ে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পাভেল তার কিছু অনুসারী কিশোরকে নিয়ে নূর ইসলামকে মারপিট করে। এতে তার হাত ভেঙে যায়। এ ঘটনার সূত্র ধরেই ১৩ আগস্টের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য যে, হতাহতের ঘটনাটি সংঘর্ষ বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরে ঐ ৫ কর্মকর্তার নেতৃত্বে এ লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটার সত্যতা জানা যায়।