ড. হাছান মাহমুদ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি ২০০৬ সালে কলমের এক খোঁচায় তা কেড়ে নিয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার সেই মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।
বুধবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর কাকরাইলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট-পিআইবি মিলনায়তনে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে’র সহায়তায় বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের অনেক উচ্চাসনে বসিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে প্রেস ইনস্টিটিউট ও প্রেস কাউন্সিল গঠিত হয়। তার হাত ধরেই ওয়েজবোর্ড গঠিত হয়। তিনি সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদা দিতেন, যেটি ২০০৬ সালে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এক কলমের খোঁচায় কেড়ে নিয়ে তাদের শ্রমিক বানিয়ে দিলেন। সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদাটা কেড়ে নেওয়া হলো। অর্থাৎ তারা (বিএনপি) সাংবাদিক এবং শ্রমিকের মধ্যে কোনও পার্থক্য রাখলেন না— যা অত্যন্ত দুঃখজনক, ন্যক্কারজনক ও নিন্দনীয়।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সেই আইন সংশোধনের কাজ চলছে এবং সংশোধিত আইনের খসড়া ইতোমধ্যে নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। খসড়া আইনটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষাধীন রয়েছে, যা সমাপনান্তে শিগগিরই মন্ত্রিসভা হয়ে সংসদে উত্থাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘সংশোধিত আইনটি পাস হলে সাংবাদিকদের যে মর্যাদা হরণ করা হয়েছিল, তা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।’
রোনা মহামারীর মধ্যে সাংবাদিক সহায়তা সম্পর্কে তিনি বলেন, করোনাকালে উপমহাদেশের কোথাও যেটি করা হয়নি, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেটি করা হচ্ছে। চাকরিচ্যুতি, বেতন না পাওয়া বা দীর্ঘ বেকারত্ব—এ তিন ক্যাটাগরির অসুবিধায় নিপতিত সাংবাদিকদের এককালীন সহায়তা দেয়া হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে দেড় হাজার সাংবাদিককে এ সাহায্য দেয়া হয়েছে এবং এটি অব্যাহত রয়েছে।
সরকারের সিদ্ধান্তে এ সহায়তা দলমত নির্বিশেষে দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা প্রেস ক্লাবের সামনে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বা মানববন্ধন করে, গলা উঁচু করে বক্তৃতা করে, তাদেরকেও শেখ হাসিনার সরকারই সাহায্যের আওতায় এনেছে। এ সময় তিনি ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নসহ গণমাধ্যম কর্মীদের সংগঠনগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাদেরকে যেভাবে দল-মত নির্বিশেষে এ সহায়তা দেয়ার কথা বলা হয়েছিল, তারা তা অনুসরণ করেছে।
তিনি আরো বলেন, এ ধরনের সহায়তা ভারত, পাকিস্তান, নেপাল বা শ্রীলংকা কোথাও দেয়া হচ্ছে না। করোনায় কোনো সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে সাহায্য দেয়া হচ্ছে, কিন্তু সেসব দেশে করোনায় অসুবিধায় নিপতিত সাংবাদিকদের এভাবে সহায়তা দেয়া হচ্ছে না। এজন্য তথ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানানোর জন্য সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন হাছান মাহমুদ।
তথ্য সচিব ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন নাহারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও পিআইবি পরিচালনা বোর্ড সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজে মহাসচিব শাবান মাহমুদ ও ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু।