স্মরনাতীতকালের লজ্জাজনক, নির্মম ও পাশবিক নারী নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায়।
অসহায় এক নিরীহ গৃহবধূকে নির্যাতন ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
দেশব্যাপী আলোচিত সমালোচিত এই ঘটনার মূলহোতা দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার, মামলার প্রধান আসামি বাদলসহ পুলিশ এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সোমবার (৫ অক্টোবর) দিনগত রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইউপি সদস্যসহ আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-
একলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য সোহাগ মেম্বার ও
একই ইউনিয়নের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের নোয়াব আলী ব্যাপারী বাড়ির লোকমান মিয়ার ছেলে সাজু (২১)।
মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশীদ চৌধুরী আসামীদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রোববার (৪ অক্টোবর) দুপুরের দিকে ঘটনার ৩২দিন পর গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পেলে তা ভাইরাল হয়ে গেলে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের।
ঘটনার পর থেকে গত ৩২ দিন অভিযুক্ত স্থানীয় দেলোয়ার, বাদল, কালাম ও তাদের সহযোগীরা নির্যাতিতা গৃহবধূর পরিবারকে কিছু দিন অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে তার পুরো পরিবারকে বসত-বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করলে পুরো ঘটনা দীর্ঘদিন স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ প্রশাসনের অগোচরে থাকে।
পরে ঘটনার জানাজানি হলে পুলিশ ও র্যাব কয়েক দফায় অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামিসহ এ পর্যন্ত ছয় আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনাটি প্রকাশ হবার পরপরই সারা দেশের মানুষ ধিক্কার জানাতে থাকে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন থেকে শুরু করে সাধারন জনগন এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন। একের পর এক ধর্ষনের ঘটনা সাধারন মানুষের মধ্যে তীব্র আতংকের সৃষ্টি করেছে। কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া ছাত্রলীগের নেতা কর্মী দ্বারা সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে এক নববধূকে গনধর্ষনের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এমন আরেকটি নারকীয় ঘটনা দেশের মানুষের মধ্যে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে অতীতে ধর্ষকদের সমুচিত বিচার না করা, ধর্ষকদের জামিনে মুক্তি পাওয়া, বিচারের দীর্ঘ সূত্রতা, বিচারে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অবহেলা ও দুর্ণীতির কারনে এসব অপরাধীরা বারবার অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে রাষ্ট্র ক্রমান্বয়ে অকার্যকর হয়ে পরবে।