কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল থেকে ২৪ ঘণ্টা পর গ্যাসের আংশিক সরবরাহ শুরু হলেও দেশের পূর্বাঞ্চলে সংকট কাটেনি। গতকাল শনিবারও দিনভর ছিল দুর্ভোগ।
অনেক এলাকায় গ্যাসের চুলা জ্বলেনি। কিছু এলাকায় জ্বলেছে মিটমিট করে। আর সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গাড়ির লাইন গত শুক্রবারের তুলনায় আরও লম্বা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কারিগরি ত্রুটির কারণে এলএনজি টার্মিনালে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পূর্বাঞ্চলে বিপর্যয় নেমে আসে। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে টার্মিনালে ত্রুটি সারিয়ে সরবরাহ শুরু হয়। দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর গ্রাহকের কাছে গ্যাস পৌঁছায়। কিন্তু সঞ্চালন লাইনে চাপ ছিল একেবারে কম।
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, গতকাল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মহেশখালীতে মার্কিন এক্সিলারেট এনার্জি টার্মিনাল ও সামিট এলএনজি টার্মিনাল থেকে ৩৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া গেছে। তবে স্বাভাবিক সময়ে দুটি টার্মিনাল থেকে ৮৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়।
পেট্রোবাংলার সূত্র বলছে, সামিটের টার্মিনাল গতকাল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করেছে। এরপর রক্ষণাবেক্ষণে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে। সন্ধ্যা সাতটার পর মার্কিন টার্মিনাল থেকে ২৪০ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে।
পূর্বাঞ্চলে গ্যাস–সংকটের মধ্যে রয়েছে কর্ণফুলী বিতরণ কোম্পানির (কেজিডিসিএল) আওতাধীন চট্টগ্রাম, বাখরাবাদের কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলা। এ ছাড়া ঢাকার পাশের তিতাসের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জও এই সংকটের মধ্যে পড়ে। এসব জেলায় জাতীয় গ্রিডের পাশাপাশি এলএনজির বড় অংশ সরবরাহ করা হয়।
আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। একটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি। অন্যটি সামিট এলএনজি টার্মিনাল। গত ১ নভেম্বর মার্কিন এক্সিলারেট এনার্জি টার্মিনালটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গভীর সমুদ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে গত বৃহস্পতিবার রক্ষণাবেক্ষণ শেষে ফিরে আসার পর টার্মিনালটি চালু করা হয়। কিন্তু ত্রুটির কারণে চালুর পর আবার বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই বিপর্যয় ঘটে।