ডাঃ দিপু মনি ও তাঁর স্বামীকে নিয়ে বেঙ্গলিপ্রেস.কম ও আমেরিকা প্রবাসী প্রখ্যাত জার্নালিষ্ট মিলি সুলতানার তথ্য প্রমানবিহীন মানহানিকর সংবাদ পরিবেশন যা সরকার ও রাষ্ট্রের জন্য বিব্রতকর।
গত ২৫ আগস্ট বেঙ্গলিপ্রেস.কম (https://bengalipress.com/2113/) নামক বাংলা অনলাইন পোর্টাল থেকে অপ্রত্যাশিত ও আশ্চর্যজনক একটি সংক্ষিপ্ত খবর প্রকাশিত হয়। পোর্টালটি “দিপু মনির স্বামীর ৫৪১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ জব্দ” শিরোনামে খবরটি প্রকাশ করে, যেখানে উল্লেখ ছিলো, “দিপু মনির স্বামী অ্যাডভোকেট তৌফিক নাওয়াজের মোট ২৫৬.৭ মিলিয়ন AED (প্রায় ৫৪১ কোটি টাকা) অবৈধ সম্পদ জব্দ করেছে আরব আমিরাত সরকার আদালতের নির্দেশে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দুটি তিন তারকা হোটেল, তিনটি অত্যাধুনিক বাড়ি, একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, ছয়টি ফ্লাট, একটি রেস্টুরেন্ট। যেসব ফ্লাটে ও বাড়িতে ভাড়াটিয়া রয়েছে তাদের এক মাসের মধ্যে খালি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।” এছাড়া বিস্তারিত তেমন কোন খবর ছিলো না।

bengalipress.com এ প্রকাশিত শিরোনাম

bengalipress.com এ প্রকাশিত সংক্ষিপ্ত সংবাদ।
খবরটি গতকাল রাতে দৈনিক অপরাজিত বাংলার দৃষ্টি গোচরে আসার সাথে সাথেই এর সত্যতা জানতে অপরাজিত বাংলার দুবাই প্রতিনিধি অনুসন্ধ্যানে নামে। কিন্তু নিউজটির সম্পর্কে দৈনিক অপরাজিত বাংলা কোন বন্তুনিষ্ট সত্যতা খুঁজে পায়নি। এদিকে বাংলাদেশের অত্যন্তঃ শ্রদ্ধাভাজন ও স্বচ্ছ ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন ব্যাক্তি মাননীয় মন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি ও তাঁর স্বামী সম্পর্কে কোন প্রমান ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্যবিহীন এধরনের খবর তাঁর এমনকি সরকারকে বিব্রত করার নোংড়া অপপ্রয়াস মাত্র।
এ অপপ্রয়াসের প্রশ্রয়ে শামিল হলেন প্রখ্যাত কলাম লেখিকা মিলি সুলতানা।

মিলি সুলতানা
আমেরিকার কুইন্স, নিউয়র্কে বসবাসকারী প্রখ্যাত লেখিকা, জার্নালিস্ট, অনলাইন একটিভিস্ট “মিলি সুলতানা” যার ফলোয়ারের সংখ্যা ৪৬ হাজার প্লাস, গতকাল তার ফেইসবুক আইডি (https://www.facebook.com/mili.sultana.90) থেকে বাংলাদেশের মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ও প্রাক্তন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডাঃ দিপু মনির স্বামী অ্যাডভোকেট তৌফিক নাওয়াজ এর আরব আমিরাতে অবৈধ সম্পদ জব্দ হওয়া নিয়ে স্ট্যাটাসটি নীচে হুবুহু তুলে ধরা হলোঃ
(Mili Sultana এর স্ট্যাটাস)
“দীপু মনির তাঁতের শাড়ি টাঙ্গাইল শাড়ির অতি সাধারণ আর অতি আপন ইমেজ দেখতে এতদিন অভ্যস্ত ছিলাম। কিন্তু আজ একি দেখছি? দিপু মনির স্বামী অ্যাডভোকেট তৌফিক নাওয়াজের মোট ২৫৬.৭ মিলিয়ন AED (প্রায় ৫৪১ কোটি টাকা) অবৈধ সম্পদ জব্দ করেছে আরব আমিরাত সরকার আদালতের নির্দেশে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দুটি তিন তারকা হোটেল, তিনটি অত্যাধুনিক বাড়ি, একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, ছয়টি ফ্লাট, একটি রেস্টুরেন্ট। যেসব ফ্লাটে ও বাড়িতে ভাড়াটিয়া রয়েছে তাদের এক মাসের মধ্যে খালি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
কিভাবে এমন সাদামাটা দীপু মনির এই হাল হল? শ্রদ্ধেয় দীপু মনিকে এমনটা দেখতে চাইনি।
আজ দীপু মনির স্বামীর অবস্থা দেখে মনে পড়ছে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রেখে যাওয়া ভাঙা স্যুটকেসের কাহিনী। আসলে জননেত্রী শেখ হাসিনার কথা অতি সত্য — তাঁকে ছাড়া আর সবাইকে কেনাবেচা করা যাবে। জাতির জনকের কন্যা ছাড়া সবাই আখের গোছাচ্ছে। সবাই চোরের খাতায় নাম লিখাচ্ছে।”
তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, উপরোক্ত তথ্য প্রমানহীন মানহানীকর এমন একটি স্ট্যাটাস দেবার পর নিজেই তা নিজের টাইম লাইন থেকে সরিয়ে নেন। এ প্রসঙ্গে তিনি তার ফেইসবুক টাইমলাইনে নতুন করে স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেন, “শ্রদ্ধেয়া ডাঃ দীপু মনি সম্পর্কিত নিউজের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ থাকায় পোষ্ট নামিয়ে নিলাম।”

তথ্যের সত্যতা খুঁজে না পাবার কথা স্বীকার করে মিলি সুলতানার স্টেটাস
তার এধরনের স্ট্যাটাসের কমেন্টস এ অনেক কমেন্টসকারী ক্ষোভ ও বিরক্ত প্রকাশ করেন। মিলি সুলতানার সরিয়ে নেয়া স্ট্যাটাসটিতে অনেকে কমেন্টে বলেছেন যে, এধরনের সংবাদ সত্য নয়। কিন্তু মিলি সুলতানা ওসসব কমেন্টসকারীদরে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন। কিন্তু পরে নিজেই অবান্তর এমন পোষ্টটি নিজ থেকেই সরিয়ে নিলেন।


সাধারন মানুষের প্রতিক্রিয়া
আরব আমিরাতের রাসেলকাইমাতে বসবাসকারী মোঃ কিবরিয়া সামসুদ্দিন গত ২১ বছর ধরে প্রবাসে অবস্থান করছেন। তিনি সেখানকার বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত। মিলি সুলতানার ফেইসবুক স্ট্যাটাসটির বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, “মিলি সুলতানার মতো কজন অভিজ্ঞ কলামিষ্ট কোন তথ্য প্রমান ছাড়া কিভাবে এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয় সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করলেন? এর পিছনে কোন দুরভিসন্ধিমূলক কিছু কাজ করছে না তো?”
কেননা বাংলাদেশ সরকারকে বিশ্ব দরবারে বিব্রত করার জন্য এর আগেও অপচেষ্টা হয়েছে। অনেকে এ কলাম লেখিকার সাথে সুবীর ভৌমিক নামে ভারতীয় এক অসৎ সাংবাদিক এর মিল খুঁজে পাচ্ছেন। সুবীর ভৌমিক এখনও জঘন্য মিথ্যাচার করে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। কিছু দিন আগেও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করতে সুবীর ভৌমিকের দ্য ইস্টার্নলিংকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ফটোশপ করা ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখানো হয় ইমরান খানের কার্যালয়ে তার সঙ্গে করমর্দন করছেন শেখ হাসিনা। যদিও ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা এক বারও পাকিস্তান সফর করেননি।
সচেতন মহলের মতে এধরনের তথ্য সত্যতা বর্জিত সংবাদ পরিবেশন এদিকে যেমন একটি স্বাধীন রাষ্টের সরকাররের জন্য বিব্রতকর, তেমনি মানহানিকরও বটে।
