মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় চলতি মাসের মাঝামাঝি কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে একটি চুক্তিতে অংশ নেয় আরব আমিরাত ও ইসরায়েল। যার অংশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরায়েল অর্থনৈতিক বয়কট চুক্তি বাতিল করলো। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক লেনদেনে অনুমোদন দেওয়ার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এ আইন বাতিল করেন। এর ফলে দু’দেশে দুতাবাস স্থাপনে আর কোন বাধা থাকলো না। ৩০শে আগস্ট শনিবার শনিবার আমিরাতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে এ খবর জানায় রয়টার্স।
প্রথমবারের মতো তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর থেকে আমিরাতের রাজধানী আবু ধাবিতে ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান এল আল ইসরায়েল এয়ারলাইন্স লিমিটেডের সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তুতির মধ্যেই খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ইসরায়েলকে বয়কটের আইন বাতিল করলেন।
এদিকে দু’দেশের এ কূটনৈতিক চুক্তি এবং ইসরায়েল বয়কট চুক্তি বাতিল হওয়াকে মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞরা ভালো চোখে দেখছেন না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর ফলে ফিলিস্তিন ইস্যু থেকে শুরু করে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধসহ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বয়কটের চুক্তিটি বাতিল করেন।
মধ্যপ্রাচ্যের আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মুহাম্মেদ জায়মান বিন খাতিব বলেন, “এ চুক্তি ইসরায়েলের চেয়েও আমেরিকার জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক জয়। মূলতঃ ইরানকে ঘায়েল করার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকা এবং ইসরায়েল সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বড় ঢাল হিসেবে পেয়ে গেলো।”
অন্যদিকে ইরান মধ্যপ্রাচ্যের এক উদীয়মান সামরিক পরাশক্তি হিসেবে ইতিমধ্যেই নিজেদের যোগ্যতার প্রমান দেখিয়েছে। গেল ইরানের সামরিক ঘাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে ইরান যেভাবে ইরাকের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার নমুনা দেখিয়েছে তাতে খোদ মার্কিন মুল্লকের ভীত নড়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় ইরানকে পর্যদুস্থ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলকে নিয়ে এমন কূটনৈতিক তৎপরতাকে ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন আন্তর্জাতিক মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা।
বিশেষজ্ঞদের ধারনা, প্রচন্ড মুসলিম বিদ্বেষী ইসরায়েল কখনই চায় না মধ্যপ্রাচ্যে কোন ইসলামিক শক্তি থাকুক। এছাড়া ফিলিস্তিন নিয়ে ইসরায়েলের উপর উপর্যোপরি আন্তর্জাতিক চাপকে রুখতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে ইসরায়েলের এ কূটনৈতিক চুক্তিতে ইসরায়েল নিরাপদ সুবিধা পাবে।
বিশেষজ্ঞরা আশংকা প্রকাশ করেছেন যে, মধ্যপ্রাচ্যের বাতাসে খুব সহসাই উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হবে। অন্যদিকে ইরানের পক্ষে ন্যাটো শক্তি তুরস্কও আমেরিকার জন্য মাথা ব্যাথার কারন হয়ে আছে।
উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি তৃতীয় দেশ হিসেবে আরব আমিরাত ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।