শেষ খবর পাওয়াঃ মোট মৃত্যু ১৬ জন।
৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে এশার নামাজের সময় বিকট শব্দে নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা বাইতুল সালাহ জামে মসজিদের পর পর ছয়টি এসিই বিষ্ফোরিত হবার মূল কারন তিতাসের গ্যাস লাইন লিকেজ। লাইনের লিকেজ থেকেই গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয় নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা বাইতুল সালাহ জামে মসজিদটি। বিস্ফোরণে মসজিদের সবগুলো জানালার কাচ উড়ে যায়। দগ্ধ মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বাইরে ছুটে এসে রাস্তায় জমে থাকা পানিতে গড়াগড়ি খেতে শুরু করে।
ঘটনার পর পর একে একে প্রকাশ হতে থাকে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এবার ঘুষের টাকা পায় নি বলে তিতাসের কর্মচারীরা লিকেজ গ্যাস লাইন মেরামত না করার কারনে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় ১২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিৎ ভাবে জানা গেছে।
এ বিষয়ে তদন্ত চলছে, কেউ দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এদিকে, বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ ৫ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে মসজিদ পরিদর্শনে যান তিতাসের এমডি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। এ সময় তিতাসের এমডি বলেন “কেউ দায়ী হলে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে”।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতের আলোকে জানা যায়, ৯ মাস আগেই গ্যাস লাইন লিকেজ মেরামতের জন্য লিখিতভাবে অভিযোগ জানানো হলেও ৫০ হাজার টাকার জন্য কাজ করেনি তিতাস। এমনটাই অভিযোগ নারায়ণগঞ্জ পশ্চিম তাল্লা বায়তুল সালা জামে মসজিদ কমিটি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মসজিদ সভাপতি আব্দুল গফুর মেম্বার দৈনিক অপরাজিত বাংলাকে বলেন, “৯ মাস আগেই যখন থেকেই গ্যাস লাইন লিকেজ হতে থাকে এটি মেরামত করার জন্য আমরা সাথে সাথেই কিন্তু তিতাসকে জানিয়েছি। তখন তারা আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাইছিল, আমরা টাকাটা যোগাড় করতে পারি নাই বলে সেটী আর মেরামত করা হয়নি।”
এবিষয়ে তদন্ত চলছে, কেউ দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মোহাম্মদ আল মামুন। তিনি বলেন, কমিটি এই বিষয়ে তদন্ত করবে।যদি কেউ বিষয়ে গাফিলতি করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব নূর হাসান বলেন, “আমরা আলামত সংগ্রহ করছি। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। গ্যাস লিকেজ এবং বিদ্যুৎ এর বিষয় মাথায় রেখেই আমরা তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি।”
ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০ কার্যদিবসের মধ্য প্রতিবেদন জমা দেবে তারা। এছাড়া, তিতাস ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানার তদন্ত কমিটির সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা।