কলাপাড়ায় গঙ্গামতি সৈকত পযটন শিল্পের একটি সম্ভাবনাময় শৈল্পিক নিদর্শন। এখানেও ঠিক একই জায়গায় দাঁড়িয়ে সুর্যোদয় ও সুযার্স্তের দৃশ্য াবলোকন করা যায়। কলাপাড়ার ধুলাসার ইউনিয়নে সমুদ্র তীরবর্তী গঙ্গামতি সৈকত। এ সৈকতে যাওয়ার একমাত্র সড়ক সংস্কারের অভাবে যানবাহন চলাচল সম্পুর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়কের কার্পেটিং ওঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত এবং সৈকতে প্রবেশ পথের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটি বিভিন্ন স্থানে বড় বড় বড় নালা-খাঁদার সৃষ্টি হয়েছে। আম্পানে সৈকতে প্রবেশের কাঁচা রাস্তাটির বালি ঢেউয়ের তোড়ে ক্ষয়ে গেছে। এখন ওই স্থানে জোয়ারের সময় পানি থাকার কারনে গাছ দিয়ে সাকু তৈরি করে যাতায়ত করতে হয় গঙ্গামতি সৈকতে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদপতর সুত্রে জানা গেছে, পর্যটকদের চলাচলের সুবিধার্থে ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর চাপলীবাজার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গঙ্গামতি পর্যন্ত কার্পেটিং সড়কটি করে। কিন্তু গঙ্গামতি সৈকতের প্রবেশের সড়কটি কি যেনো এক রহস্যের কারনে বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পার হলেও সৈকতের প্রবেশ সড়কটির পাকা হবার কোনোই খবর নেই।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াকাটা ভ্রমনে আসা পযর্টকদের সুর্যোদয় দেখার জন্য যেতে হয় গঙামতি সৈকতে। সুর্যোদয়ের মনোলোভা এ দৃশ্য উপভোগ করতে পযর্টকদের কুয়াকাটা-কলাপাড়া বিকল্প সড়কের ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গঙ্গামতি যেতে হয়। পযর্টকদের চলাচলের সুবিধার্থে ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্পেটিং করে সড়কটিতে, মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে কার্পেটিং ওঠে গেছে ভাঙ্গা সড়কে প্রায়ই ঘটেছে দুর্ঘটনা। ধুলাসার ইউনিয়নের চর চাপলী, কাউয়ার চর,পশ্চিম চাপলী, চর গঙ্গামতি এলাকার মানুষসহ
হাজার হাজার পযটক ঝুকিঁ নিয়ে চলাচল করে ওই সড়ক দিয়ে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হতে হয় গাড়ি নিয়ে ভ্রমনে আসা পযর্টকদের। প্রায় সময়ই পর্যটকদের গাড়ি মাঝপথে বিকল এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়। গঙ্গামতি সৈকত জুড়ে লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি, নানান প্রজাতির বৃক্ষরাজি আর সূযোর্দয়ের মত মনলোভা দৃশ্য উপভোগ করতে হাটু পানি পেরিয়ে যেতে হয় পর্যটকদের। দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটি দেবে যাওয়ায় মোটরসাইকেলে যাওয়া-আসার সময় প্রায়শই
দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পর্যটকরা। গুরুত্বপূর্ন এ সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসীসহ পর্যটকরা। পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার,পূর্বদিকে গঙ্গামতির সৈকত জুড়ে রয়েছে লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরন। রয়েছে ঝাউবনসহ ম্যানগ্রোভ প্রজাতির কেওড়া, ছইলা, গেওয়া, বাইনসহ নানান প্রজাতির সারিসারি বৃক্ষ। সূযোর্দয়ের মত এমন দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিন সমাগম ঘটে শতশত পযর্টকের।
স্থানীয় ক্ষুদে ব্যবসায়ী সবুর বেপারী জানান, পযর্টকদের যাতায়ত সুবিধায় সড়কটির মেরামত কাজ শুরু হলেও অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর অদৃশ্য কোন এক কারনে তা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। গঙ্গাতমি সৈকতে বেড়াতে আসা মনিরুল হক বলেন, এখানে সৌন্দর্য কোন অংশেই কম নয়। কুয়াকাটায় যতগুলো দর্শনীয় স্পট রয়েছে এর মধ্যে গঙ্গামতি সৈকতে এসে আমার কাছে আকর্ষনীয় মনে হয়েছে। এখানের লাল কাকড়াসহ প্রাকৃতিক দৃশ্য আমাকে মুগ্ধ করছে। তবে এই সৈকতে আসার একমাত্র সড়কটির বেহাল অবস্থার কারনে পর্যটকরা এখানে আসার আগ্রহ হারাবে, ভ্রমনে আসা এক পর্যটক দম্পতি গঙ্গামতি সৈকত ঘুরে এসে বলেন, সৈকতের অপরুপ দৃশ্য দেখে আপ্লত হয়েছি কিন্তু সৈকতে যাওয়ার রাস্তার বেহাল দশায় সব আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। কুয়াকাটা সৈকতের চেয়েও এ সৈকতটি াারো অসাধারন লাগছে। ধুলাস্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাষ্টার বলেন, জোয়ারের পানির স্রোতে গঙ্গামতি প্রবেশের রাস্তার বালি ক্ষয়ে এমন দশা হয়েছে। পযর্টকদের স্বার্থে গঙ্গামতির চরে আসার একমাত্র রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা হলে পর্যটকরা এসে এই সৈকতের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে নির্বিঘেœ
আসতে পারে। কলাপাড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদপতর (এলজিইডি) উপসহকারী মো: দেলোয়ার হোসেন বলেন, সৈকতের প্রবেশ পথের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটি আরো উচু করার দরকার এবং ওই স্থানে পানি আসা-যাওয়ার জন্য একটি কালভার্ট নির্মান করা জরুরী প্রয়োজন। উপরস্থ কতৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে,অনুমোদন হয়নি।চাপলীবাজার থেকে গঙ্গামতি পযর্ন্ত সড়কটির দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।এ বিষয় জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মো: শহিদুল হক বলেন, সৈকতের প্রবেশ পথের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটি দিয়ে পযটক ও এলাকার লোকজনের চলাচলের যাতে দুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়, রাস্তাটির সংস্কার কাজ শুরু করার জন্য অতি দ্রুত প্রস্তাব পাঠানো হবে এলজিইডি অধিদপ্তরে।