কোভিড~১৯ এর ভয়াবহ আগ্রাসী তৎপড়তাকে রুখতে ফ্রান্স সরকার সে দেশে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি প্রতিটি বিনোদন স্পটে সরকারী খরচে সকলের জন্য করোনা টেস্ট এর ব্যবস্থা রেখেছে। ২৮ আগস্ট শুক্রবার সকাল ৮ টা থেকে রাজধানী প্যারিসে সবার জন্য মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলকভাবে করা হয়েছে ।
ভয়াবহ আকারে রুপ নিচ্ছে ফ্রান্সে করোনার আগ্রাসী তৎপরতা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দু’ মাস আগের বার্তা যেনো সত্য প্রমান করতে কোমড় বেঁধে নেমেছে করোনা ভাইরাস! গত ১ মাস ইউরোপ করোনার প্রকোপ কিছুটা কাটিয়ে উঠলেও চলতি মাসের প্রথম দিকে থেকে তার ভয়াবহতা আবার দেখা দিয়েছে।
গত মে’ মাসের পর চলতি মাসের গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ৬ হাজার ১১১ জন করোনায় আক্রান্ত হলো ফ্রান্সে। উল্লেখ্য যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও সতর্কতা জারি করে বলে ছিলো, ” বিশ্বে করোনার দ্বিতীয় ধাপ প্রথম ধাপ থেকেও ভয়াবহ হবার সম্ভবনা আছে।”
এদিকে মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপ ফ্রান্সের বাংলাদেশী কমিউনিটিতেও বিপদজনক আঘাত হেনেছে। গত এক সপ্তাহে ৭ বাংলাদেশী করোনা আক্রান্ত হওয়াতে ফ্রান্স বাংলাদেশ কমিউনিটিতে করোনা আতংক বিরাজ করছে। কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ সকল ধরনের সভা , মিটিং ও পিকনিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা থেকে বিরত থাকতে সকলকে অনুরোধ জানিয়েছেন। ফ্রান্স বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ সকল প্রবাসীদেরকে সরকারের দেয়া স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন
২৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জিন কাসটেক দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এক বক্তব্যে বলেছেন, “ফ্রান্সে আবারও লকডাউন হোক তা ফ্রান্স সরকার চায়না । লকডাউন এড়ানোর জন্য সকল প্রদক্ষেপ নেয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “ফ্রান্সে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সত্যিই উদ্বেগজনক। তাই ফ্রান্সে বেশি আক্রান্তের বিবেচনায় রেড জোন নির্ধারণ করে তার তালিকা ও করণীয় সম্পর্কে রেড জোনের মেয়রদের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। মেয়ররা তাদের এলাকায় জনসাধারনকে মাস্ক বাধ্যতামূলক পরা সহ করোনা প্রতিকারে যা যা করণীয় তার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।”
ইতিমধ্যে করোনা সংক্রমণের ‘রেড জোন’ হিসেবে রাজধানী প্যারিস এবং মাখসাই শহরকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে ফ্রান্স সরকার।
এদিকে ফ্রান্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, “নতুন আক্রান্তদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ কর্মক্ষেত্রে সংক্রমিত হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে মেডিক্যালের কোনো সংযোগ নেই।”
ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, “নতুন করে আবারো হানা দেয়া করোনাভাইরাস ৬৫ বছরের বেশি বয়সের তুলনায় ফ্রান্সে ৪০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে চারগুণ বেশি । যদিও তিনি সতর্ক করেছেন যে,প্রবীণদের মধ্যেও বাড়ছে এবং তারা আরও ঝুঁকিপূর্ণ।”
উল্লেখ্য যে, ফ্রান্সে এ পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে মোট ৩০ হাজার ৫৭৬ জনের। তাদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের।
দেশের বিভিন্ন হসপিটালে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধিন আছেন মোট ১ লাখ ৪৩ হাজার ১৩৮ জন, তাদের মধ্যে গুরুত্বর অসুস্থ আছেন ৩৪১ জন। হসপিটাল থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৫ হাজার ৯৮৪ জন।