যদিও খালেদা জিয়ার সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোন কম্পেয়ারিজমে আমি বিশ্বাসী নই, তবে এটা করতে হচ্ছে, কারন পরিবেশ পরিস্থিতি সেই জায়গাতে নাই, হুদাই রশি কামড় দিয়ে চুপ থাকার মানে নেই।
আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যা করেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় অন্য কেউ করেনি। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিএনপি কিন্তু একটি জিনিস করেছে, জানেন কি সেটা ? রাজাকার মন্ত্রী সভায় রেখে, খালেদা জিয়া তার ২০০১ শাসনামল শুরুর কয়েকদিনের মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় নামের একটা মন্ত্রনালয় স্থাপন করে দিয়েছিল। পাশাপাশি অনেক রাজাকার, সেমি রাজাকার, রাজাকার মনোভাব সম্পুর্ন বিএনপি জামাতিদের মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাও বানিয়ে দিয়েছিল। উদ্দেশ্য একটাই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী যেই অপবাদ খালেদা জিয়ার জোট সরকারের শরীরে ছিল তা থেকে মুক্তি পেতে। আর কিছু না…
অপরদিকে বিএনপি এই দেশে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি অপরাজনীতি মৌলবাদের মৌলবাদের বীজতলা, মৌলবাদের উৎপাদন, মৌলবাদের লালন, মৌলবাদের পালন, মৌলবাদের বাজারজাতকরণ, ইতিহাসের পাতা স্বাক্ষী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এইদেশের ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির পুর্নঃজন্মদাতা হলেও জিয়া খালেদা যা করেনি তা হচ্ছে কাউয়ামী স্বীকৃতির দান, দৌড়াইয়া হাদিসের প্রাতিষ্ঠানিক সাংবিধানিক স্বীকৃতি। অপরদিকে জন্মগত ও আদর্শিক ভাবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মৌলবাদ ও মৌলবাদী শিক্ষার বিপরিধে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাউয়ামীদের শুধু স্বীকৃতি দিয়েছে তা নয়, পার্লামেন্টে দৌড়াইয়া হাদিসের বিশেষ সুবিদাও নিশ্চিত করে দিয়েছে যাতে করে অন্য সরকার ইচ্ছা করলেও ফিউচারে এটাকে বাতিল করে দৌড়াইন্না কাউয়ামী কসাইদের রাষ্টের সুবিদা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে না পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এটা করতে হয়েছে কারন মৌলবাদীদের মনে বিশ্বাস জন্মানো যে আওয়ামীলীগ মৌলবাদী বিরোধী কেউ নয়।
উপরের দুইটা কম্পেয়ার এই জন্য বলতে হলো, আমি গ্রামে থাকি সাধারন একজন মানুষ, ধর্ম সম্মন্ধে অনেক জানি তা বলবো না, তবে যতটুকু জানি তা সচ্ছটুকু জানি। যেমন ধরেন বাংলাদেশের ইসলাম ধর্ম রক্ষা ও চর্চার সাথে কাউয়ামী বা দৌড়াইয়া হাদিসের কোন সম্পর্ক নাই। তবে কাউয়ামী শিক্ষা ও দৌড়াইয়া হাদিসের সাথে সম্পর্ক আছে বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মের খুব ক্ষুদ্র, বিচ্ছিন্ন ওহাবী, দেওবন্দী, মওদুদীবাদী দর্শনে বিশ্বাসীদের। যাদের সাথে বাংলাদেশের মুল ইসলাম সুফীবাদী দর্শনের আকাশ পাতাল ফারাক। অর্থ্যাত বাংলাদেশের বাস্তবতায় ইসলাম ধর্মের ভ্রান্ত ও ব্যাক্তি অনুসারীদের মতবাদ ওহাবী, দেওবন্দ ও মওদুদীবাদ ২০১৪ সাল থেকে যেভাবে প্রচার ও বিকাশ লাভ করেছে, উক্ত সব মতবাদ গুলোর বাংলাদেশী ভার্সনের চর্চার বয়স সর্বোচ্চ ৬০-৭০-৮০ বছরের হলেও গত ৭ বছরেই সমাজের সর্বস্তরে বিরাট ব্যাপ্তি লাভ করেছে এর আগে এইসব মতবাদ ছিল সংখ্যালঘু।
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইসলামের সম্মান অক্ষুন্ন রাখতে চেয়ে যেই উধারতা দেখিয়েছেন, তিনি জানেন কি না জানি না যাদের জন্য উনি ঢেলে দিয়েছেন, মসজিদ বানিয়েছেন, এইসব মতাদর্শধারীদের মধ্যে অর্থ্যাৎ একজন ওহাবী আলেম ওলামা বা একজন মওদুদীবাদী আলেম ওলামার পিছনে দাড়িয়ে কেউ যদি নামাজ পড়ে তার নামাজ আদায় হবে না। দেওবন্দীদের বিষয়েও ঝামেলা রয়েছে। জানি না উনার আশেপাশে কোন সুফীবাদী আলেম ওলামারা উনাকে এইসব বিষয় গুলো বলে বুঝাতে চেষ্টা করেছিলেন কি না।
তো যেই কথা বলার জন্য এইসব বললাম, তা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামের কল্যান করতে গিয়ে জেনে না জেনে এইদেশের ইসলামের বিকৃত ভার্সন, ভুল ও ভ্রান্ত ইসলামের সেবা করেছেন। যার মাশুল এই বাংলাদেশ কে দিতে হবে হয়তো আজ থেকে আরো পরে কোন একদিন এই দেশ আফগানিস্থান হয়ে কিংবা পাকিস্থান হয়ে। সেদিন উনি হয়তো উনি থাকবেন না, তবে উনার নাতিপুতিরা এই জ্বালা ভোগ করবে, ভোগ করবে আমাদের প্রজন্মরা।
কাজেই প্রধানমন্ত্রীর উচিত এই দেশের ইসলাম ধর্মের সঠিক ভার্সন সুফীবাদ যাকে বলা হয়, তাদের সাথে পরামর্শ করে সম্ভব হলে কাউয়ামী দৌড়াইয়া কসাই যারা তাদের কাউয়ামী স্বীকৃতি বাতিল করে রাষ্টের কোন জায়গাতে কাউয়ামী পাশ কোন মৌলবাদী যেন প্রবেশ করতে না পারে সেই ব্যবস্থা বাতিল করে অন্তত ইসলাম ধর্মের সহি চর্চার কিছুটা হলেও উপকার করা।