ইট ওয়াজ নট এলার্মিং, প্রবাস থেকে কত টাকা রেমিটেন্স আসলো না আসলো এটাও আপাতত কোন ফ্যাক্ট নয়। এই ফ্যাক্ট হইলো বাংলাদেশ রাষ্টের ইমেজ সংকটের, ফ্যাক্ট হইলো বাংলাদেশ রাষ্টের অনিয়ন্ত্রিত জঙ্গীবাদ মৌলবাদের প্রশ্নের… ঘুরিয়ে পেচিয়ে যেভাবেই বলা হোক, কলংকিত হবে বাংলাদেশ রাষ্ট, সরকার হবে সেই কলংকের অংশীদার।
বাংলাদেশ থেকে শ্রমশক্তি রপ্তানী বিষয়টা গত কয়েক বছরের গল্পের কোন উত্থান নয়, ১৯৭২ সালের ২০ জানুয়ারি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও কর্মী প্রেরণ বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশসমূহের সাথে সমঝোতা সৃষ্টি হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে বাংলাদেশি কর্মী গমন শুরু হয়। অর্থ্যাৎ বাংলাদেশ জন্ম সময় থেকেই শ্রমশক্তি রপ্তানীর বিষয়টা বাংলাদেশের সাথে জড়িত। উক্ত এই লম্বা সময়ে বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশী শ্রমিকেরা বেশ সুনাম অর্জন করেছে, তাদের মেধা, শ্রম, সততা, দ্বায়বদ্ধতা দিয়েই ভিনদেশে কাজ করেছে। এইসব শ্রমিকেরা বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে, অনেকেই সাধারন শ্রমিক হিসেবে প্রবাসে গমন করে সেখানে নিজেরাই কোম্পানীর মালিক হয়েছে, নিজেরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছে, কেউ কেউ ঐসব দেশে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। সোজা কথায় কোন লস নেই, লস করেনি এরা।
কিন্তু বিবর্তনের শুরুটা ২০০১-২০০৬ সময়ের পরে, খালেদা নিজামীর ক্ষমতার সময়ে বাংলাদেশে খুন ধর্ষন জমি দখল চুরি চামারি করে একদল বিএনপি জামাতি কর্মীরা সরকার বদলের পরে বাংলাদেশে অবস্থান নিজের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশংকায় দেশ ছেড়ে এদের শ্রমিক বললে অন্যায় হবে, এরা কামলা, যখন বাংলাদেশের বড় শ্রমি বাজারের দেশ গুলোতে গমন করলো তখন থেকেই বিপত্তির শুরু, ভালো করে বললে দেশের এইসব দাগী সন্ত্রাসী, চোর, ছেচ্ছর, ছিনতাইকারীরা ছিলো বাংলাদেশের দুধের মত পরিষ্কার শ্রমবাজারের একেক ফোটা গরুর চোনা। সেই গরুন চোনা গুলোই কিন্তু এখন প্রবাসে বেশ বড় সংখ্যক হয়ে গেছে, তারা প্রবাসে গিয়েও ক্ষান্ত হয়নি, যা খুশি তা করছে, ঐসব দেশে কামলাগিরি করছে, ঐখানে ছোটখাট নানান ধরনের ক্রাইম করছে, সরকারী আইন অমান্য করছে এবং ফাকে বাংলাদেশে নানান ইস্যু উষ্কে দিচ্ছে, জঙ্গীবাদ মৌলবাদের পিছনে অর্থ বিনিয়োগ করছে, নিজেরাও জঙ্গীবাদ মৌলবাদ কে ধারন করছে। সোজা কথা এই মুহুর্তে সবচেয়ে বড় আশংকার বিষয় হচ্ছে আগামী কয়েক বছর পরে প্রবাসে বাংলাদেশের পুরাতন বৃহৎ শ্রম বাজার গুলোতে শ্রমশক্তি রপ্তানীর সুযোগ থাকবে কি না সেটাও প্রশ্নবোধক জায়গায় নিয়ে গেছে…
ফ্রান্সের বিরুদ্ধে আন্দোলনের বেসামরিক বড় একটা ইফেক্ট হবে যে সেটা আমরা শুরুতেই বুঝতে পেরেছিলাম, বিশেষ করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশ গুলোতে বাংলাদেশে রপ্তানী বানিজ্য এবং নন মুসলিম দেশে বসবাসরত বাংলাদেশী মুসলিম যারা ফ্রান্সের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে আন্দোলন করেছে, নানান এক্টিভিজম চালিয়েছে, অর্থ্যাৎ এই দুই শ্রেনীকে চরম মাশুল দিতে হতে পারে, যার প্রাথমিক একটা নমুনা বুঝে নেওয়া যেতে পারে সিঙ্গাপুর থেকে ১৫ বাংলাদেশী শ্রমিক কে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো এবং তদন্ত চলমান রয়েছে সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
এমন অবস্থায় তারা দেশে ফিরে কি করবে না করবে সেটা নিয়ে আমার আপনার বা রাষ্টের চিন্তার কিছু নেই, আবার চিন্তা না করেও উপায় নেই, কারন এরা দেশে ফিরেই আবারো সেই পুরাতন চুরি চামারির পেশায় ফিরে যেতে পারে, সমাজ দেশ পরিবেশ ভয়ংকর করে তুলতে পারে। পাশাপাশি আগামী দিনে যেসব দেশ থেকে এরা ফিরছে সেসব দেশে বাংলাদেশী নতুন শ্রমিক যেতে পারবে কি না সেটা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি করে এসেছে…
অর্থ্যাৎ সংকট শুধু দেশে ফেরা নয়, বাংলাদেশ নামক রাষ্টের বালাৎকার করে একদল কামলা পরিচয়ের উগ্র জঙ্গী মৌলবাদীর দেশে ফেরা।
প্রশ্ন হচ্ছে সরকারের করনীয় কি ?
এক কথায় কিছু নাই, আরেকটু ভেবে বললে যার যার পাপের প্রায়শ্চিত্ত নিশ্চিত করা, অর্থ্যাৎ যেসব দেশ থেকে অপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত হয়ে কামলা ফিরবে, সেইসব কামলাদের গ্রেপ্তার করে ক্রসফায়ার দিয়ে বড় বড় করে প্রচার করলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিষয়টা দাঁড়ায়, ভিনদেশে ভালো করে থাকলে সুখ, অপরাধ করে ফিরলে মৃত্যু। ব্যস…
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।	
                        
                                                
                                                
                        
                        